সৃষ্টিশীল মাধ্যমে শিক্ষাদান শিশুদের জন্য অধিক কার্যকর: গবেষণা
প্রচলিত শিক্ষাপদ্ধতির চেয়ে সংগীত, নাটক রোলপ্লে, পাপেট, ছবি ইত্যাদি সৃষ্টিশীল মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান শিশুদের জন্য অধিক কার্যকর বলে নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে।
বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য শিক্ষাসহ অন্যান্য শিক্ষায় এ পদ্ধতি কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। বুধবার (১ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে গবেষণাটির ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
ইউনিভার্সিটি অভ লিডস, আর্ক ফাউন্ডেশন, ও ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অভ পাবলিক হেলথ যৌথভাবে 'শহুরের বস্তিবাসীদের সাথে শিল্প ও স্বাস্থ্যের একীভূতকরণ : বাংলাদেশের মূল স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে স্টিম শিক্ষাব্যবস্থার উদ্যোগ' শীর্ষক এ গবেষণাটি করেছে। ঢাকা মহানগরীর অনানুষ্ঠানিক স্কুলগুলোতে সৃষ্টিশীল মাধ্যমে স্বাস্থ্য শিক্ষার ওপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
গবেষণায় দেখা যায়, বাংলা ও গণিতে শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ কিন্তু ইংরেজি ও বিজ্ঞান এ দুই বিষয়ে তাদের বেশ অনাগ্রহ। সীমিত শিক্ষার কৌশল জানার কারণে শিক্ষকেরা ইংরেজি ও বিজ্ঞান শেখানোকে চ্যালেঞ্জিং মনে করেন। করোনায় লকডাউনের সময় অনানুষ্ঠানিক স্কুলগুলোতে করোনা মহামারী একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল। এসময় শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কীভাবে মাস্ক পরতে হবে, হাত ধুতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে তা শিখিয়েছেন। করোনা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতনতা তাদের অভিভাবকদের চেয়ে বেশি ছিল।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, কীভাবে স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত জ্ঞানের বাস্তবিক ব্যবহার করতে হয় সে বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ছিল না। এছাড়াও অনানুষ্ঠানিক স্কুলগুলোতে অবকাঠামো, আর্থিক সহায়তা এবং শিশু-বান্ধব পরিবেশের অভাব ছিল।
গবেষণা ফলাললের ওপর আলোচনায় বক্তারা বলেন, এ ধরনের গবেষণা শিশুদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে। তবে এর সঙ্গে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরও আর্টস, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়ায় একসঙ্গে মনোযোগী করে তুললে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
তারা আরও বলেন, শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। দেশের সব ধরনের স্কুলের শিক্ষার্থীদের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। বিশেষ করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নে পরিচালিত স্কুলের শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে মনোযোগ প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে আর্ক ফাউন্ডেশন-এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. রুমানা হক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-প্রকল্প পরিচালক এস. এম. মোর্শেদ বিপুল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর উপ-প্রধান মো. মোখলেছুর রহমান, লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের নুফিল্ড সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের অধ্যাপক ড. মহুয়া দাস, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অভ পাবলিক হেলথের অধ্যাপক জাহিদুল কাইয়ুম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।