যুদ্ধবিরতি ও মানবিক বিরতির মধ্যে পার্থক্য কী?
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ প্রায় এক মাস গড়িয়েছে। গাজায় যুদ্ধের ভয়াবহতায় জাতিসংঘ ও বহু দেশের পক্ষ থেকে অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে। খবর বিবিসির।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির ধারণাকে সমর্থন করা হয়নি। কেননা তাদের যুক্তি, এতে করে হামাস লাভবান হতে পারে। একইসাথে যুক্তরাষ্ট্র ও বহু পশ্চিমা দেশের সরকার স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠনটিকে 'সন্ত্রাসী গোষ্ঠী' হিসেবে বিবেচনা করে।
তাই এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি নয়, বরং মানবিক বিরতির আহ্বান জানানো হয়েছে। এক্ষেত্রে যুদ্ধবিরতির সাথে এই মানবিক বিরতির বেশ কয়েক জায়গায় পার্থক্য রয়েছে৷
যেমন, আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতির তুলনায় মানবিক বিরতি অল্প সময়ের জন্য হয়ে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে সেই সময়কাল মাত্র কয়েক ঘন্টার। আবার মানবিক বিরতি সকল যুদ্ধাঞ্চলের প্রযোজ্য হয় না। বরং এটি নির্দিষ্ট সময়ে কোনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কার্যকর হয়৷
জাতিসংঘের মতে, দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক সমাধান অর্জন মানবিক বিরতির লক্ষ্য নয়৷ বরং এটি শুধুই মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে প্রয়োগ করা হয়।
অন্যদিকে জাতিসংঘের মতে, যুদ্ধবিরতি তুলনামূলক দীর্ঘমেয়াদী বিবেচনায় করা হয়। এতে প্রায়শই একটি স্থায়ী রাজনৈতিক মীমাংসার সম্ভাবনা থাকে। আর সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে বিবাদমান দলগুলোর মধ্যে সংলাপে অনুষ্ঠিত হয়৷
এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। ওয়াশিংটন ডিসি ছাড়াও ওহাইয়ো, ইউটাহ, ক্যালিফোর্নিয়াতেও যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে বলে জানিয়েছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।
ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় মদদ দেওয়ার অভিযোগ তুলে ওয়াশিংটন ডিসির বিক্ষোভকারীরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন, 'বাইডেন, বাইডেন, তুমি লুকাতে পারবে না; তোমার বিরুদ্ধে আমরা গণহত্যার অভিযোগ আনছি।' (বাইডেন, বাইডেন, ইউ ক্যানট হাইড; উই চার্জ ইউ উইথ জেনোসাইড)।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জনকে হত্যা করে হামাস। জবাবে সেদিন থেকেই গাজা উপত্যকায় লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি আক্রমণে অন্তত সাড়ে ৯ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে প্রায় ৪ হাজারই শিশু।