ভুলে যাওয়া জয়ের স্বাদ পেতে বাংলাদেশকে করতে হবে ২৮০
শুরুটা ভালো ছিল না, সেভাবে বড় জুটিও গড়ে ওঠেনি। মাঝে কোনো বল না খেলেই অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস 'টাইমড আউট'- এর শিকার হলে মানসিক ধাক্কাই খায় শ্রীলঙ্কা। তবে সব ভুলে এক পাশ আগে খেলে গেলেন চারিথ আসালাঙ্কা, দলের খারাপ সময়ে ব্যাট হাতে হয়ে উঠলেন কাণ্ডারী। তার সেঞ্চুরি করার দিনে এলো আরও কয়েকটি ছোট কিন্তু কার্যকরী ইনিংস, সব মিলিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে লড়াকু সংগ্রহই গড়লো শ্রীলঙ্কা।
সোমবার দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিং করা লঙ্কানরা ৪৯.৩ ওভারে সব ক'টি উইকেটে ২৭৯ রান তুলেছে। জয়ের স্বাদ কেমন হয়, তা ভুলে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য এই রান পাড়ি দেওয়া যে সহজ হবে না; সেটা বলাই যায়। কারণ টানা ছয় ম্যাচ হারের পর্বে কোনোটিতে লড়াইও করতে পারেনি বাংলাদেশ। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে খুবই করুণ দশা দলটির।
প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে কুশল পেরেরাকে ফিরিয়ে দেন শরিফুল ইসলাম। শুরুতেই উইকেট হারালেও লঙ্কানরা অবশ্য চাপ কাটিয়ে তোলে। পাথুম নিসাঙ্কা ও অধিনায়ক কুশল মেন্ডিসের ব্যাটে এগোতে থাকে তারা। কিন্তু ৬০ পেরিয়ে হঠাৎ-ই দিক হারায় দলটি। সাকিবের পর লঙ্কানদের ইনিংসে আঘাত হানেন বিশ্বকাপে অভিষেক হওয়া তানজিম সাকিব।
দুই সাকিবের তোপে ৬ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় উইকেটে নিসাঙ্কার সঙ্গে ৬১ রানের জুটি গড়ে আউট হন মেন্ডিস। সাকিবের বলে শরিফুলের হাতে ক্যাচ দেন ১৯ রান করা ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। একটু পর থামেন নিসাঙ্কাও। তানজিম সাকিবের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে ইনসাইড এজ হন তিনি, ভেঙে যায় তার স্টাম্প। ফেরার আগে ৩৬ বলে ৮টি চারে ৪১ রান করেন নিসাঙ্কা।
এখান থেকে জুটি গড়েন আসালাঙ্কা ও সাদিরা সামারাবিক্রমা, ৬৩ রান যোগ করেন এ দুজন। ৪২ বলে ৪টি চারে ৪১ রান করা সামারাবিক্রমাকে বিদায় করে এই জুটি ভাঙেন সাকিব। এরপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রথমবারের একটি ঘটনা ঘটে। দুই মিনিটের মধ্যেই প্রথম বল মোকবিলা করার জন্য প্রস্তুত না হওয়ায় 'টাইমড আউট' হয়ে ফিরে যান ম্যাথুস। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এভাবে আউট হওয়া একমাত্র ব্যাটসম্যান তিনি।
আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, নতুন ব্যাটসম্যানকে দুই মিনিটের মধ্যেই প্রস্তুত থাকতে হয় প্রথম বল মোকাবিলা করার জন্য। কিন্তু ম্যাথুস সেটা পারেননি। হেলমেট পরছিলেন তিনি, এমন সময় হেলমেটের বেল্ট ছিড়ে যায়। হেলেমেটের জন্য বাইরে ইশারা করেন তিনি, হেলমেট নিয়ে একজন দৌড়েও আসেন। কিন্তু কালক্ষেপণ হওয়ায় আম্পায়ারের কাছে অভিযোগ জানান বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব। নিয়ম অনুযায়ী ম্যাথুসকে আউট ঘোষণা করা হয়।
এই ঘটনা ভুলে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে ৭৮ রানের জুটি গড়ে তোলেন আসালাঙ্কা। ধনঞ্জয়া ৩৪ রান করে ফিরলে পরে মাহিশ থিকসানার সঙ্গে ৪৫ ও দুশমন্ত চামিরার সঙ্গে ২০ রানের জুটি গড়েন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ও বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া আসালাঙ্কা।
৪৯ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করা লঙ্কান এই ব্যাটসম্যান ১০৫ বলে ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় ১০৮ রানের মহাকার্যকর ইনিংস খেলেন। থিকসানা ৩১ বলে ৩টি চারে ২২ রান করেন। তানজিম সাকিব ১০ ওভারে ৮০ রানে ৩টি উইকেট নেন। শরিফুল ও সাকিব ২টি করে উইকেট পান। একটি উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।