কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতির আলোচনা
কাতারের মধ্যস্থতায় গতকাল (বুধবার) হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি চুক্তির জন্য আলোচনা হয়েছে। প্রস্তাবিত চুক্তিতে তিন দিনের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে গাজা থেকে প্রায় ৫০ জন ইসরায়েলি বেসামরিক জিম্মির মুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে।
আলোচনায় উপস্থিত থাকা একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। চুক্তিটি এখনো উভয় পক্ষের কাছে বিবেচনাধীন রয়েছে। ইসরায়েলের মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও এতে সমন্বয় করছে।
সম্ভাব্য চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েলও কিছু ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুকেও মুক্তি দিতে পারে। তবে সেটি সংখ্যায় ঠিক কত হবে, সে সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়নি। একইসাথে সম্ভাব্য চুক্তির অংশ হিসেবে গাজায় মানবিক সহায়তার পরিমাণও বাড়ানোর আহ্বান জানানো হবে।
ঐ কর্মকর্তার তথ্যমতে, হামাসের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত চুক্তিটির সাধারণ রূপরেখায় সম্মতি প্রকাশ করা হয়েছে। তবে গাজায় ক্রমাগত বোমাবর্ষণ করতে থাকা ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনো চুক্তিটির ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হচ্ছে।
কাতারের বহুমুখী পররাষ্ট্রনীতির কারণে হামাস ও ইসরায়েল উভয়ের সাথেই দেশটির ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। পরস্পরবিরোধী এই দুই পক্ষের মধ্যে দেশটি এর আগেও মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করেছে। তবে এখনই সমস্ত বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়নি হামাস।
রয়টার্সের পক্ষ থেকে গতকাল (বুধবার) হামাসের পলিটিক্যাল ব্যুরোর সদস্য ইজ্জাত এল রাশকের কাছে প্রস্তাবিত চুক্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি সরাসরি বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। অন্যদিকে এই বিষয়ে ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাওয়া হলে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এমনকি কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য প্রকাশে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে।
গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক অফিস কাতার থেকে পরিচালিত। এই গোষ্ঠীটিই গত ৮ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা করে। এতে প্রায় ১৪০০ ইসরায়েলি নিহত হয় ও ২৪০ জনকে জিম্মি করা হয়।
অন্যদিকে এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের ক্রমাগত বোমা হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। যাদের মধ্যে শতকরা ৪০ ভাগই শিশু।
অন্যদিকে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাশেম ব্রিগ্রেড গত সোমবার জানায়, তারা পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে ৭০ জন নারী ও শিশুকে মুক্তির জন্য রাজি হয়েছিল।
আর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত মঙ্গলবার বলেন, "জিম্মিদের মুক্তির জন্য আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। যার মধ্যে একটি হচ্ছে, স্থল আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ তৈরি করা।"