টাকা ছাড়াও যারা কোটিপতি হতে চান, গুরুত্ব দিন এই ১০ বিষয়ে
আপনি যদি টাকা ছাড়া কোটিপতি হতে চান তাহলে দশটি বিষয়ের উপরে গুরুত্ব দিন। টাকা ছাড়া যে কোটিপতি হওয়া যায়, ব্যাপারটা শুনতে আপনাদের অবাক লাগতে পারে। আমরা মনে করি, কোটিপতি হতে হলে অবশ্যই টাকা দিয়েই কোটিপতি হতে হবে। বিষয়টা আমরা একটু অন্যভাবে চিন্তা করতে পারি। সত্যিকার অর্থে, কোটিপতি হওয়ার জন্য আপনার প্রচুর টাকার দরকার নেই; আপনার কোটিপতি হওয়ার একটা মাইন্ডসেট থাকা দরকার। আমরা সাধারণ মানুষেরা যারা গরিব, মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত– তারা যেভাবে চিন্তা করি, যেভাবে কাজ করি, যেকোনো বিষয়ের ব্যাপারে যেভাবে সিদ্ধান্ত নেই, একজন ধনী মানুষ বা কোটিপতি মানুষ সেভাবে সিদ্ধান্ত নেন না। তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ধরনও ভিন্ন। আমরা যেভাবে কাজ করি তারাও যদি সেভাবে কাজ করতেন, ভিন্নভাবে না করতেন-- তাহলে তারাও কোটিপতি ক্লাবের একজন সদস্য হতেন না।
তাহলে তারা কী করেন? কোন কোন বিষয়ের প্রতি তারা গুরুত্ব দেন? তারা যেভাবে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন আমরা আসলে সেভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। তারা কখনো খুবই ক্যালকুলেটিভ, কখনো খুবই রিস্ক টেইকার এবং তাদের অনেক বিষয় আছে যেগুলো আমাদের সাথে মিলবে না। কয়েকটা বিষয় আপনি যদি নজর দেন, ভালভাবে মেনে চলেন– তাহলে আপনিও কোটিপতি ক্লাবের একজন সদস্য হয়ে উঠবেন।
এক, স্রোতে গা ভাসাবেন না। আপনার আশেপাশের সব মানুষ একটা কমফোর্ট জোনের দিকে ছুঁটছে। সবাই যে কাজ করতে পারে সেই কাজের দিকেই তাদের ছোটার প্রবণতা। যদি স্রোতে গা ভাসান তাহলে আপনিও তাদের মতো একজন হবেন। তখন কোটিপতি ক্লাবের সদস্য হওয়া আর সম্ভব হবে না। তাই ক্রাউডকে ফলো করবেন না। আপনি ক্রাউডের বিপরীতে যাবেন। সবাই যেভাবে চিন্তা করছে আপনি আরেকটু ক্রিয়েটিভলি চিন্তা করবেন, একটু নতুনভাবে চিন্তা করবেন এবং সেই চিন্তা করে সেখানে বসে থাকবেন না, সেই চিন্তাকে কাজে রূপদান করবেন। কারণ, শুধু চিন্তা আপনার জন্য ভালো কিছু নিয়ে আসে না, যদি না ঐ চিন্তাকে আপনি কাজে খাটাতে পারেন, ঐ চিন্তার প্রতিফলন কাজের মধ্যে প্রকাশ করতে পারেন।
দুই, নিজের উন্নতির জন্যে প্রচুর পরিমাণে পড়াশোনা করতে হবে। ধরুন, আপনি পড়াশোনা শেষ করে কাজ শুরু করেছেন, কিন্তু কাজ শুরু করার পর পড়াশোনা থেকে পুরোপুরি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। বিশ্বাস করুন বর্তমান যুগে আপনি যদি পড়াশোনা না করেন, আমি উদ্দেশ্যমূলক পড়াশোনার কথা বলছি (শুধু উপন্যাস-গল্প পড়তে বলছি না, আপনি যে বিষয়ের ওপর কাজ করবেন সেই বিষয়ের উপর পড়াশোনা করা, আর্থিক লিটারেসি সংক্রান্ত বিষয়ে পড়াশোনা করা, বিজনেস সংক্রান্ত বিষয়ে পড়াশোনা করা, যে বিষয়ে আপনি কাজ করবেন তার ওপরে বিস্তারিত পড়াশোনা করা ইত্যাদি) তাহলে আপনি বেশিদূর এগুতে পারবেন না। ওয়ারেন বাফেটের মতো বিখ্যাত ধনী ব্যক্তি দিনে প্রায় সাত থেকে আট ঘণ্টা করে পড়াশোনা করেন। আমরা কী এমন জ্ঞানী ব্যক্তি হয়ে গেছি যে প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া শেষ করে পড়াশোনার দরজা পুরাপুরি বন্ধ করে দিয়েছি? আপনি যদি মিলিওনিয়ার হতে চান, আপনি যদি কোটিপতি হতে চান তাহলে প্রতি মুহূর্তে নিজেকে আপডেট করতে হবে, প্রতি মুহূর্ত পৃথিবীর কোথায় কি ঘটছে- বিশেষ করে আপনার এরিয়াতে, সেটা আপনাকে জানতে হবে। আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীরা কী করছে, আপনি কী করতে চাচ্ছেন, আপনার আইডিয়া কীভাবে আপনি বাস্তবায়িত করবেন– ইত্যাদি বিষয়াবলী জানার জন্য আপনাকে প্রচুর পড়তে হবে, স্টাডি করতে হবে। পড়াশোনা আপনার কাছে নতুন নতুন আইডিয়া ও তথ্য নিয়ে হাজির করবে।
তিন, নিজের লক্ষ্যগুলো ঠিক করে নিন। আপনি যেটাই করতে চান না কেন, কোনো একটি লক্ষ্য নিয়েই আপনাকে সামনে এগুতে হবে। লক্ষ্যবিহীন যদি কোনো জাহাজ সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে এটি কি কোনো লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে? সে মাঝ দরিয়ায় ঘোরাঘুরি করে হয়ত সে একটা জায়গায় গিয়ে থামবে, কিন্তু সেটি তার লক্ষ্য নয়। এজন্য আপনি কোথায় যেতে চান, কী করতে চান– তার বিস্তারিত চিন্তা-ভাবনা করে আপনার লক্ষ্য ঠিক করে নিন। এখন লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য আপনি আপনার স্ট্রাটেজি ফিক্সড করুন। স্টার্টেজি ফিক্সড করার পরে আপনি কাজে নেমে পড়ুন। আপনার আশেপাশে কে কী বলল, সেদিকে তাকানোর কোনো দরকার নেই। আপনি যদি বিশ্বাস করেন, আপনি পারবেন, তাহলে আপনি কাজে লেগে থাকুন। যতক্ষণ সফল না হবেন আপনি কাজ করতে থাকুন আপনি সফল হবেনই।
চার, সবসময় ধারাবাহিকভাবে কাজ করুন এবং যুক্তিসঙ্গত আচরণ করুন। আপনার আচরণ যেন হয় ধারাবাহিক ও যুক্তিনির্ভর। এখন একটা কাজ করছেন, একটু পরে আরেকটা কাজ করছেন, তার একটু পরে আরেকটা কাজ করছেন, কোনোটার সাথে কোনোটার মিল নেই। যদি এরকম হয় আপনার জীবন প্রণালী তাহলে আপনি সফলতার ধারেকাছে যেতে পারবেন না। আপনাকে আপনার আচরণে, আপনার কাজে, ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে এবং আচরণে থাকতে হবে কনসিস্টেন্ট। অনেকেই মনে করেন, শুধু কঠোর পরিশ্রম করলেই আপনি সফল হবেন। কঠোর পরিশ্রমের সাথে সফলতার সম্পর্ক খুবই পজিটিভ। কিন্তু শুধু কঠোর পরিশ্রম আপনার সফলতার নিশ্চয়তা দেয় না, যদি আপনি আপনার পরিশ্রমের মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে না পারেন। একটা কথা আছে, ডোন্ট ওয়ার্ক হার্ড, ওয়ার্ক স্মার্ট। কথাটার সাথে অনেকেই হয়তো একমত কিন্তু আমি বলি, ওয়ার্ক স্মার্ট বাট ডোন্ট ফরগেট টু ওয়ার্ক হার্ড। অর্থাৎ আপনি স্মার্ট কাজ করবেন কিন্তু কঠোর পরিশ্রম কে পরিত্যাগ করবেন না, কঠোর পরিশ্রম করতে ভুলে যাবেন না, তাহলেই আপনি আপনার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাবেন।
পাঁচ, আপনাকে সুসংগঠিত এবং সুশৃঙ্খল হতে হবে। দেখুন, পৃথিবীতে যত ধনী মানুষ আছেন, তারা তাদের ব্যক্তিগত জীবনে, ব্যবসায়িক জীবনে বা যে পেশার সাথে তারা নিজেরা যুক্ত আছেন– সেখানে তারা প্রচণ্ডভাবে সুসংগঠিত এবং সুশৃঙ্খল। তারা প্রতিটা পা ফেলেন মেপে মেপে, তারা ইনডিসিপ্লিন ওয়েতে কোনো কাজ করেন না। তার মানে এই না যে– তারা সবসময় শুধু প্রফিট করেন, অনেক ক্ষেত্রে তারা লসও করেন। তারা তাদের অভিষ্ঠ লক্ষ্য থেকে ফিরে আসেন না। হয়তো দশটা কাজ শুরু করে দুই জায়গাতে তারা ফেল করতে পারেন, কিন্তু আটটা জায়গায় তারা এত ভালো করেন যে– দুই জায়গার যে ক্ষতি সেটা পুষিয়ে নেওয়া তাদের জন্য কোনো ব্যাপার-ই হয় না। কারণ, এখানে তারা কয়েকশো গুণ বেশি লাভ করে ফেলেন। এই লাভ করার পেছনে মূল যে কারণ, সেটা হচ্ছে তারা খুব সুসংগঠিত এবং সুশৃঙ্খলভাবে কোনো কাজ শুরু করেন, ব্যবসা পরিচালনা করেন, তাদের কাজকে সম্পাদন করেন। শুধু যে ব্যবসার ক্ষেত্রে তারা সুসংগঠিত তা কিন্তু নয়, তারা তাদের পারিবারিক জীবনেও খুবই সুসংগঠিত থাকেন। সাফল্য কিন্তু মিরাকেল কিছু না। কঠোর পরিশ্রমের এর মাধ্যমে, কঠিন পরিকল্পনার মাধ্যমে, ডেডিকেশানের মাধ্যমে আপনি সাফল্য অর্জন করতে পারবেন।
ছয়, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হতে হবেন। সারা দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করার পেছনে আপনার শরীরের ভূমিকা সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। সময়কে আমরা মূল্যবান বলছি, কিন্তু যদি আপনি আপনার শরীরকে গুরুত্ব না দেন, শরীর যদি আপনার সুস্থ না হয়, আপনি যদি এনার্জি ম্যানেজমেন্ট করতে না পারেন– তাহলে দুনিয়ায় সময়সহ কোনো কিছুই আপনি সঠিকভাবে ম্যানেজ করতে পারবেন না। এইজন্য যারা ধনী মানুষ, কষ্ট করে বড় হয়েছেন (উত্তরাধিকার সূত্রের কথা আমি এখানে বলছি না) তারা কিন্তু শরীরের প্রতি খুব যত্নশীল। তারা সকালে হাঁটেন অথবা সন্ধ্যায় জিমে যান বা সকালে জিমে যান, খাওয়া-দাওয়া হিসাব করে করেন, জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলেন, শরীরের যত্ন নেন, মস্তিষ্কের যত্ন নেন, মনের যত্ন নেন। আপনার আমার সবার প্রাধান্য হওয়া উচিত শরীরের যত্ন নেওয়া। আর যদি আপনি ধনী ক্লাবে আপনার নাম লেখাতে চান তাহলে এটা আপনার একটা অত্যাবশ্যকীয় ব্যাপার।
সাত, সঞ্চয়ী স্বভাব গড়ে তুলতে হবে। দেখুন আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ আছেন, তারা আয় করেন দশ টাকা ব্যয় করে থাকেন বারো টাকা। তারা হয়ত দুই টাকা ঋণ করেন বা আগের সঞ্চয় ভেঙে ফেলেন। আপনি যদি আপনার সাধ্যের মধ্যে চলতে না পারেন অবশেষে আপনার কোনো লাভ হবে না। প্রথম দিকে তো ব্যবসার জন্য কেউ আপনাকে পুঁজি দেবে না, আপনার নিজেকেই পুঁজি সংগ্রহ করতে হবে। আর সেই পুঁজি সংগ্রহ করার প্রথম এবং প্রধানতম উপায় হচ্ছে, আপনি যা আয় করবেন তার একটি অংশ আপনি সঞ্চয় করবেন। এবং সেই সঞ্চয় যখন পাইল্ড আপ হবে তখন সেটা বিনিয়োগ-যোগ্য টাকা হবে।
তখন আপনি ধীরে ধীরে সেটি ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করতে থাকবেন। এই জন্য এইটা একটা লম্বা সময়ের প্রক্রিয়া। সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে আপনাদের একটা নিয়ম মেনে চলতে হবে, ওয়ারেন বাফেটের নিয়ম, যা আয় করছেন তার একটা অংশ আপনি আগে সঞ্চয় করে নেবেন তারপর ব্যয় করবেন। আমরা যেটা করি, খরচ করার পরে যেটুকু থাকে সেটুকু আমরা সঞ্চয় করি, এটা একটা ভুল ধারণা। নিজেকে আগে পেমেন্ট করবেন, তারপরে অন্যদের জন্য খরচ করবেন। যারা কোটিপতি তারা কিন্তু সবসময় সঞ্চয়ের অভ্যাসটাকে বজায় রেখেছেন। অনেক টাকার মালিক হলেও তারা যা আয় করেন তার চেয়ে বেশি কখনো খরচ করেন না। এজন্য প্রতি বছর তাদের সম্পদ বাড়ে, নেটওয়ার্থ বাড়ে। আমরা যারা আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি করি তাদের প্রতি বছর ঋণ বাড়ে। এইজন্যে মিলিয়নিয়ার ক্লাবে বা কোটিপতি ক্লাবে যদি আপনি নাম লেখাতে চান তাহলে আপনাকে সঞ্চয়ী স্বভাবের হতে হবে।
আট, ভবিষ্যতের জন্য তৈরি হতে বর্তমানকে স্যাক্রিফাইস করতে হবে। কথাটার মর্মার্থ হচ্ছে, আপনি যদি ভবিষ্যতে নিজেকে বড় করতে চান তাহলে বর্তমানের অনেক সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, অনেক আনন্দ, অনেক ভোগ আপনাকে ত্যাগ করতে হবে। একটা মোটা অংকের টাকা আপনাকে পাইল্ড আপ করতে হবে যেটি আপনি বিনিয়োগ করে ধনী হতে পারবেন। বর্তমানের অনেক আনন্দ, অনেক ভোগ, এগুলো আপনি ত্যাগ করতে পারলে তখন ভবিষ্যৎ আপনার কাছে সুন্দর হতে পারে। অনেকে মনে করেন, পৃথিবীতে আর কয়দিনই বা বাঁচবো, কী হবে জীবনে, বর্তমানে এত কষ্ট কেন করব ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি বলি, আপনি এটা করবেন কারণ আপনি কোটিপতি হতে চান, আপনি ধনী হতে চান এবং যারা ধনী হয়েছে তারা এটাই করেছেন। সুতরাং, আপনার উদ্দেশ্য যদি হয় ধনী হওয়া তাহলে এটা আপনাকে করতেই হবে, বিকল্প নেই।
নয়, সঠিক সঙ্গী এবং সহযোগী নির্বাচন করতে হবে। এই কথাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি আপনার সঙ্গী নির্বাচনে ভুল করেন, বিশেষত আপনার স্পাউস নির্বাচনে ভুল করেন তাহলে আপনার জীবন শেষ। আপনি যতই মেধাবী হন না কেন আপনি যতই ট্যালেন্টেড হন না কেন আপনি সামনে যেতে পারবেন না, পেছন থেকে সেই ভুল সঙ্গী আপনাকে টেনে ধরবে। আপনি বাসায় গিয়ে ঠিক মতো ঘুমাতে পারবেন না। সারাদিন পরিশ্রম করার পর বাসায় গিয়ে আপনি যে যত্ন তার কাছ থেকে আশা করবেন দেখবেন তার উল্টা হচ্ছে।
এরপরের যে বিষয়টি আসছে, আপনি যাদের সাথে কাজ করছেন বা যারা আপনার আন্ডারে কাজ করছেন তাদের নির্বাচনের ক্ষেত্রেও খুব হুঁশিয়ার হতে হবে। কারণ তাঁরা যদি সততার সাথে কাজ না করে, মন প্রাণ ঢেলে কাজ না করে তাহলে আপনি বড় হতে পারবেন না। সুতরাং, আপনার বড় হওয়ার জন্য আপনার পারিপার্শ্বিকতা, আপনার সঙ্গী নির্বাচন, আপনার সহযোগী নির্বাচন এটা খুবই বড় একটা ভূমিকা পালন করে। যারা এই নির্বাচন করতে ভুল করেছেন এবং ব্যর্থ হয়েছেন তারা আসলে তাদের সারা জীবনের জন্য ব্যর্থ হয়েছেন। সুতরাং, এই বিষয়টাতে সবাই খুবই সচেতন থাকবেন। অধিকাংশ ধনী মানুষ তারা তাদের ব্যক্তিগত জীবনে এবং সহযোগী, সহকর্মী নিয়োগে বা নির্বাচনে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। হয়তো আপনারা বলবেন যে, বিল গেটসের সংসার তো ভেঙে গিয়েছে। দেখবেন, যখন তারা সংসার করেছেন তখন তারা পুরো আন্তরিকতা দিয়েই সেটা করেছেন।
দশ, অন্যের ফিডব্যাক গুলোকে অবজ্ঞা করা যাবে না। দেখুন, আমরা যখন সামনে চলতে থাকি তখন বিভিন্ন ধরনের আলোচনা-সমালোচনা আসে। আমরা সব সময় আলোচনা, সমালোচনাকে অবজ্ঞা করতে শেখার কথা বলি। কারণ, পাছে লোকে কিছু বলে– এটা ভেবে আপনি সামনে এগোতে পারবেন না আবার অন্যের সমালোচনাকে সবসময় যদি আমলে, নেন তাহলে দেখবেন সবাই শুধু নেগেটিভিটিতে পূর্ণ কথাবার্তা বলছে। এক্ষেত্রে একটা বিষয় হচ্ছে অন্যের আলোচনা বা সমালোচনাকে আপনি পুরোপুরি অবজ্ঞা করতে পারবেন না। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে আপনি বিচার করে দেখবেন যে, কোনগুলো আপনার জন্য ভালো। যেগুলো আপনার জন্য ভালো সেগুলো আপনি গ্রহণ করবেন। কারণ, সব সমালোচনাই কিন্তু খারাপ নয়। সমালোচকেরা অনেক সময় আপনার ভালো দিক দেখিয়ে দেয়, আপনার দুর্বল দিক দেখিয়ে দেয়, আপনার সবল দিকের প্রতি আলোকপাত করে। সুতরাং, সমালোচনাকে, ফিডব্যাককে অবজ্ঞা না করে যেগুলো আপনার জন্য ভালো সেগুলো গ্রহণ করুন।
এই যে দশটি পরামর্শের কথা আমি বললাম, এই দশটা পয়েন্ট যদি আপনি বিজ্ঞতার সাথে আপনার জীবনে প্রয়োগ করতে পারেন, ধনী মানুষেরা যেভাবে ব্যবহার করে সেভাবে ব্যবহার করতে পারেন– তাহলে দেখবেন, একসময় আপনিও ধনী মানুষের কাতারে সামিল হয়েছেন। মনে রাখবেন, এটা কিন্তু একদিনে হবে না এটা একটা লং জার্নি, এটা লাইফ জার্নি, এটা সময় হতে সময় লাগে এবং অধৈর্য হলে চলবে না। জীবনে চলার পথে ব্যর্থতা, সফলতা সবই আসবে। ব্যর্থতা আসলেই মুষড়ে পড়া যাবে না আবার সফল হলেই চারগুণ আনন্দিত হওয়ারও কোনো দরকার নেই। মাথা স্থির রাখেন, কাজের প্রতি ডেডিকেটেড হন, সৎ হন দেখবেন আপনি সত্যি সত্যি একদিন কোটিপতিতে পরিণত হয়েছেন।
লেখক: অর্থনীতি বিশ্লেষক, ফাইন্যান্স ও বিজনেস স্ট্রাটেজিস্ট; সিইও, ফিনপাওয়ার লিডারশীপ ইন্টারন্যাশনাল
বিশেষ দ্রষ্টব্য: নিবন্ধের বিশ্লেষণটি লেখকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও পর্যবেক্ষণের প্রতিফলন। অবধারিতভাবে তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর অবস্থান বা সম্পাদকীয় নীতির প্রতিফলন নয়