‘গণফ্রন্ট’ এবারও ২৫ আসনে লড়বে
২০০৮ সালে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পাওয়া 'গণফ্রন্ট' নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার পর প্রতিবারই তাদের প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এবার দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ২৫টি আসনে 'মাছ প্রতীকে'র প্রার্থী দিয়েছে দলটি।
এমনকি চোখে পড়ার মতো দলটির তেমন কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নেই। নেই কোনো ওয়েবসাইট এবং ফেসবুক পেজ।
মাছ প্রতীক নিয়ে ২০০৮ এর ৯ম জাতীয় নির্বাচনে ১৪টি আসনে প্রার্থী দেয় এই দল। প্রতিটি আসনে ভরাডুবি ঘটে, সবগুলো আসন মিলে ভোট পায় মাত্র ৪০০৯টি। ১৪ জন প্রার্থী গড়ে ২৮৬টি করে ভোট পায়। সেবছর ০.০১ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রতিটি আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয় সকল প্রার্থীর।
গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী, একটি নির্বাচনী এলাকায় যত ভোট পড়ে কোনো প্রার্থী তার ৮ ভাগের এক ভাগ ভোট না পেলে নির্বাচন কমিশনে তার জমা দেয়া জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।
২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচনে একটি আসনে প্রার্থী দিয়ে মাছ প্রতীকের এই দলের প্রার্থী পায় মাত্র ২,৭১৭ ভোট। সেবছর ০.০২ শতাংশ ভোট পেয়েও জামানত হারায় এই দলের প্রার্থী।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে এই দল ১৩টি আসনে নিজেদের প্রার্থী দিয়ে সকল আসনে মোট ভোট পায় মাত্র ৫,২৭৭। সে বছর কাস্টিং ভোটের মাত্র ১.০১ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রতিটি আসনে তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। ১৩ জন প্রার্থী গড়ে ৪০৫টি করে ভোট পায়।
আবার দলের চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন (কর আইনজীবি) দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নিজেই কোনো আসনে প্রার্থী হননি।
মোঃ জাকির হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আওয়ামী লীগ বা বিএনপিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনভাবে ক্ষমতায় যেতে দেয়া হবে না, দলের এই সিদ্ধান্তের কারণেই আমরা প্রতিটি নির্বচনে আমাদের সক্ষমতা অনুযায়ী প্রার্থী দিয়েছি, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনেও প্রার্থী দেয়া হয়েছে।"
প্রতিটি নির্বাচনে তাদের প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "বাংলাদেশের ভোটাররা মার্কা (প্রতীক) দেখে ভোট দেয়। দলের কোনো আদর্শ, লক্ষ্য বা প্রার্থীর যোগ্যতা বিবেচনায় ভোট দেয় না। আওয়ামী লীগ, বিএনপির প্রতীক নিয়ে একটি কলাগাছ প্রার্থী হলেও তাকেই ভোট দেবে। আমাদের দল যতো দিন থাকবে আমরা ভোটে অংশ নেব; যে পরিমাণ ভোটই পাই না কেন।"
তিনি এবারের নির্বাচনে দলের প্রার্থী হয়েছেন কি-না, জানতে চাইলে বলেন, "আমি ৩০ নভেম্বর সকল প্রস্তুতি নিতে বিলম্ব হওয়ায় নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে নমিনেশন ফরম দাখিল করতে পারিনি।"
দল পরিচালনার ফান্ড নিয়ে জাকির হোসেন বলেন "আমাদের কর্মসূচী কম, তাই খরচও কম। শুধু অফিস পরিচালনা ব্যয় প্রতিমাসে ৮ হাজার টাকা, আর ছোটখোটো কর্মসূচীর জন্য কিছু ব্যয় হয়। মাসে গড়ে ১৫ হাজার টাকায় চলে আমাদের। এই টাকা দলের নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্খীদের অনুদান থেকে।"
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে ৬৪ জন নেতাকর্মী দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে। তবে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়ন জমা দিয়েছে ২৫ জন।