ঐতিহাসিক জয়ের পরও না পাওয়ার বেদনায় শান্ত
নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়ার আগে নাজমুল হোসেন শান্ত জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের কোনো দল যা কখনও করতে পারেনি, এবার তেমন কিছু করতে চান তারা। দৃঢ় কণ্ঠে সিরিজ জয়ের কথা জানিয়েছিলেন সাকিব আল হাসানের অবর্তমানে নেতৃত্ব পাওয়া বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। আশা পূরণ হয়নি, তবে শেষ ওয়ানডেতে মিলেছে ঐতিহাসিক জয়। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে তাদের হারিয়েছে বাংলাদেশ।
পেসারদের আগুনে বোলিংয়ে কিউইদের ৯৮ রানে গুটিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ তুলে নিয়েছে ৯ উইকেটের বিশাল জয়, তখনও বাকি ছিল ২০৯ বল। টানা ১৮ হারের পর পাওয়া এই জয়টি বিশেষ, স্মরণীয়। দলের সবার মতো ভালো লাগা কাজ করছে শান্তর মাঝেও। অবশ্য এরপরও বাংলাদেশ অধিনায়কের কণ্ঠে না পাওয়ার বেদনার কথা। সিরিজ জিততে পারলে আরও ভালো লাগতো বলে জানালেন তিনি।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেন, 'যদি ইতিহাস চিন্তা করেন, তাহলে অবশ্যই গর্ব করার মতো ফল করেছি। একটা ম্যাচ জিততে পেরেছি। তবে আমাকে যদি ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞেস করেন, আমি সিরিজ জিততেই এসেছিলাম এবং এটা বলার সময় আমি সত্যিকার অর্থেই বুঝিয়েছিলাম। প্রথম ম্যাচে বৃষ্টির জন্য আমরা হয়তো কিছুটা দুর্ভাগা ছিলাম। আমাদের বোলিং অপশনগুলো শেষ হয়ে গিয়েছিল। অবশ্যই আমরা খুশি যে জিততে পেরেছি। তবে সিরিজ জিততে পারলে আরও ভালো লাগতো।'
নিউজিল্যান্ড সফরে সব সময়ই ভুগতে হয় বাংলাদেশকে। ২০২২ সালে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে টেস্ট জিতে হারের বৃত্ত ভাঙে দলটি। তবে বাকি দুই ফরম্যাটে বাংলাদেশ যে জিততে পারে, এমন আশা করা মানুষের সংখ্যা বেশি নয়। সেখানে শান্তর বলা সিরিজ জয়ের স্বপ্নের কথা অনেকের কাছে বাড়াবাড়িও মনে হতে পারে। যদিও তরুণ এই নেতার দাবি, সিরিজ জয়ের স্বপ্ন অবাস্তব ছিল না। দলের ক্রিকেটারদের সামর্থ্য ও মানসিকতার ওপর বিশ্বাস থাকায় সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখেন তিনি।
তার ভাষায়, 'আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, খেলা শুরুর আগে আমাদের কাজটা কী… আমাদের প্রস্তুতি, কাজের প্রতি আমরা কতটা সৎ, আমরা কী করতে চাই, এসব গুরুত্বপূর্ণ। সবচেয়ে বড় কথা যে, আমরা কতটুকু বিশ্বাস করছি। দল হিসেবে আমার খুবই বিশ্বাস যে এই দল আরও ভালো করতে পারে। আমার কাছে সবসময়ই গ্রুপটাকে দেখে মনে হয়েছে যে, এই গ্রুপের ওই ক্ষুধাটা আছে যে এখানে এসে ম্যাচ জিততে পারি, সিরিজ জিততে পারি।'
সিরিজ শুরুর আগে শান্ত বলেছিলেন, 'এর আগে যতবারই (নিউজিল্যান্ডে) এসেছে (বাংলাদেশের) কোনো দল, তারা এটি (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাদা বলের ক্রিকেটে জয়) করতে পারেনি। তবে কোনো না কোনো দলকে তো করতে হবে। আমার মনে হয়, এই দলটার সেই সামর্থ্য আছে। সবাই বিশ্বাস করে, এই বছর আমাদের ভিন্ন ফল হবে।' 'জিততে পারার' আত্মবিশ্বাস পেয়ে যাওয়া বাংলাদেশ আগামী ২৭ ডিসেম্বর তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে কিউইদের বিপক্ষে মাঠে নামবে।