শীতকালীন ধোঁয়াশায় ছেয়ে আছে ঢাকা, দিল্লি
রাজধানী ঢাকার আকাশ গত বুধবার ধোঁয়াশায় ছেয়ে ছিল। এদিন সকালে শহরটির বায়ুমান ছিল ৩২৫। সুইজারল্যান্ডের আইকিউএয়ার এটিকে 'বিপজ্জনক' পর্যায় হিসেবে জানিয়েছে। এদিকে একই অবস্থা প্রতিবেশি দেশ ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিরও।
বিশ্বের জনবহুল শহরগুলোর অন্যতম ঢাকা। শহরটির বাসিন্দা ২ কোটিরও বেশি। শহরটির বায়ুর গুণমান খারাপ হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে বড় বড় প্রকল্প শুরু হওয়া এবং জীবাশ্ম জ্বালানী অতিরিক্ত ব্যবহারকে দায়ী করা হয়েছে, যা শহরের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যকে ঝুঁকিতে ফেলছে।
রফিক মণ্ডল নামে এক রিকশাচালক বলেন, 'রাস্তায় রিকশা চালানোর সময় আমরা প্রায়ই হাঁপানি, জ্বর এবং অ্যালার্জিতে ভুগি। এতে খুব অসুবিধা হয়।'
বুধবার সকাল ৯টায় ঢাকার একটি জায়গা থেকে তোলা ছবি প্রকাশ করেছে রয়টার্স। ছবিটিতে ধোঁয়াশার চিত্র দেখা গেছে। আইকিউএয়ার জানায়, এই সময়ে ঢাকা ছিল বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহর এবং এর বায়ুমানের স্কোর ছিল ৩২৫।
তবে দুপুর নাগাদ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়। দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে ঢাকার বায়ুমানের স্কোর ছিল ১৭৭।
উল্লেখ্য, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোরকে 'খুব অস্বাস্থ্যকর' বলা হয়। ৩০১ থেকে ৪০০ এর মধ্যে থাকা স্কোরকে 'ঝুঁকিপূর্ণ' বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ২০০ এর মধ্যে স্কোরকে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য 'অস্বাস্থ্যকর' মনে করা হয়।
ধূলা থেকে রক্ষার জন্য ঢাকা শহরের কর্তৃপক্ষকে রাস্তায় পানি স্প্রে করতে দেখা যায়। তবে শহরটির বাসিন্দারা জানান, কেবল পানি স্প্রে করাই যথেষ্ট নয়। এর জন্য আরো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান তাদের।
ওয়াসিম আক্তার নামে এক বাসিন্দা বলেন, "বায়ু দূষণ অনেক ক্ষতি করছে। শহরজুড়ে মেট্রো রেলের মতো বড় বড় প্রকল্পগুলোর নির্মাণ কাজ চলছে। যে কারণে দূষণও বাড়ছে। এজন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।"
এদিকে কেবল বাংলাদেশই নয়, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের বায়ু পরিস্থিতিও দিন দিন দিল্লির মতোই খারাপতর হচ্ছে। সেন্ট্রাল পলিউশান কন্ট্রোল বোর্ডের তথ্যমতে, দিল্লির বায়ুমানের স্কোর ৩৭৮।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে তার বায়ুমান পরিস্থিতি উন্নতির জন্য দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশি দেশগুলোর সাথে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।
একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিবছর বাংলাদেশে অকাল মৃত্যুর প্রায় এক-পঞ্চমাংশ বায়ু দূষণজনিত কারণে হয়ে থাকে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, কঠিন কণা, তরল ফোঁটা ও গ্যাসের মিশ্রণের কারণে প্রায়ই বায়ু দূষিত হয়ে থাকে। ঢাকার কিছু এলাকায় বাতাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানদণ্ডের চেয়ে ২০ গুণ বেশি সূক্ষ্ম কণার মাত্রা লক্ষ্য করা গেছে।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণের সমস্যায় জর্জরিত। এর বাতাসের মান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।