নতুন বছরে চট্টগ্রামে ফ্লাইট শুরু করছে সৌদি এয়ারলাইনস
২০২৪ সালে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সৌদি আরবের জেদ্দায় ফ্লাইট শুরু করতে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনস। আগামী বছরের মার্চ থেকে চট্টগ্রাম-জেদ্দা রুটে এই বিলাসবহুল বিমান সংস্থার ফ্লাইট চালু হলে– চট্টগ্রামের যাত্রীদের সৌদিযাত্রায় সুবিধা হবে। এতদিন এই রুটে শুধুমাত্র বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট সপ্তাহে তিনদিন চলাচল করতো। আর একটি চলাচল করতো চট্টগ্রাম-মদিনা রুটে।
সৌদি এয়ার লাইন্সের তথ্যমতে, প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে; পরবর্তীতে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়বে। সবগুলো ফ্লাইট পরিচালিত হবে– বিলাসবহুল বোয়িং ৭৭৭ এবং বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজ দিয়ে।
এতদিন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিমানবন্দর থেকে অনেক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করলেও এমিরেটস, সিঙ্গাপুর, কাতার কিংবা ইতিহাদের মতো বিমান সংস্থার ফ্লাইট চলাচল করেনি।
সৌদি এয়ারলাইনস যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে বিশ্বের স্টার এয়ারলাইনসের ফ্লাইট চলাচল শুরু হচ্ছে।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার তাসলিম আহমেদ বলেন, "চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ফ্লাইট চলাচলের সময়ও আগের চেয়ে বেড়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সংখ্যা বেড়েছে। আগামী মার্চে সৌদি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট চালু হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের একটি টিম চট্টগ্রাম বিমানবন্দর ঘুরে গেছেন। সব ঠিক থাকলে আগামী মার্চে ফ্লাইট শুরু হবে।"
চট্টগ্রামভিত্তিক ট্রাভেল এজেন্ট এম এইচ হজ গ্রুপের স্বত্বাধিকারী মঈনুদ্দিন হাসান বলেন, "চট্টগ্রাম থেকে মধ্যপ্রাচ্যের যেকোনো রুটে ফ্লাইট পরিচালনা ব্যবসা সফল হবে নিশ্চিত বলা যায়। সৌদি এয়ারলাইনসও ব্যতিক্রম হবে না। এই রুটে প্রচুর যাত্রীর চাপ আছে– যার সুফল বাংলাদেশ বিমান ও ইউএস বাংলা এয়ারও নিচ্ছে।"
ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগে থেকেই ফ্লাইট পরিচালনা করছিল সৌদি এয়ারলাইনস। বর্তমানে এই এয়ারলাইনসে করে জেদ্দা হয়ে ১৫১টি বিলাসবহুল ফ্লাইটের মাধ্যমে বিশ্বের ১০২টি গন্তব্যে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এখন হজ মৌসুমে হজযাত্রী পরিবহনে বাংলাদেশ বিমানের পাশাপাশি সৌদি এয়ারলাইনসও ফ্লাইট পরিচালনা করছে। হজ মৌসুম শুরুর আগে মার্চ থেকেই ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করছে ওই বিমান সংস্থা। আগামী ১২ মার্চ থেকে শুরু হতে পারে রমজান। আর রমজানে ওমরাহ করতে যাওয়া যাত্রী থাকে অনেক বেশি। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই সৌদি এয়ারলাইনস মূলত মার্চ থেকেই ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করছে।
এভিয়েশন ক্লাব চট্টগ্রামের প্রেসিডেন্ট আসিফ চৌধুরী বলছেন, "এই সিদ্ধান্ত চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এতে করে শাহ আমানত এয়ারপোর্টের সক্ষমতা বাড়বে। একইসঙ্গে আমরা শুনছি, আরো অনেক বিমান সংস্থা ফ্লাইট পরিচালনায় আগ্রহী হয়েছে।"
হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন (হাব) চট্টগ্রামের চেয়ারপারসন শাহ আলম বলেন, "চট্টগ্রাম থেকে সৌদি এয়ারলাইনস ফ্লাইট পরিচালনা করলে– দুটি সুফল পাবেন যাত্রীরা। একটি হচ্ছে, লাক্সারি বিমানে চড়ে হজের সুযোগ। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, ইউরোপ-আমেরিকার অনেক যাত্রী চট্টগ্রাম থেকে যায়। যাত্রাবিরতিতে সৌদি আরবে ওমরাহ করেই তারা গন্তব্যে যেতে পারবেন।"
শাহ আমানত বিমানবন্দরের তথ্যমতে, এই বিমানবন্দর থেকে এখন আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিদেশি বিমান সংস্থা– ফ্লাই দুবাই, এয়ার এরাবিয়া, ওমান এয়ার, জাজিরা এয়ার, সালাম এয়ার ও স্পাইস জেট। এর সবগুলোই কম বাজেট বা কম খরচের বিমান সংস্থা। এর আগে ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল— থাই এয়ার, থাই স্মাইল, এয়ার এশিয়া, মালিন্দো, রোটানা এয়ার, আরএকে এয়ারলাইনস, সিল্ক এয়ার, টাইগার এয়ারওয়েজ ইত্যাদি। এসব বিমান সংস্থাও স্বল্পখরচের।