দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর কৌশল ছিল নির্বাচনে জয়লাভের ‘রণকৌশল’: কাদের
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মধ্যে থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ার কৌশলকে নির্বাচনে জয়লাভের 'রণকৌশল' ছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথসভায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় কাদের বলেন, ''দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মধ্যে থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ার কৌশল ছিল নির্বাচনে জয়লাভের রণকৌশল। আর এই নির্বাচনে রণকৌশলের সোনালি ফসল আমরা ঘরে তুলেছি।''
তিনি বলেন, ''বিরোধী দল নির্বাচন বর্জন করায় নতুন রণকৌশল করতে হয়েছে। তাই এবার সংসদে বড় একটা অংশ স্বতন্ত্র প্রার্থী। এবার নির্বাচনে ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে।''
মন্ত্রী আরও বলেন, ''মোটামুটি সংঘাতমুক্ত হয়েছে নির্বাচন। যারা নির্বাচন আসেনি তারা অনেক কথাই বলেছে। তারা বলছিল এই নির্বাচন হতে দেবে না। তাদের সেই আস্ফালন এখন কোথায় গেল?''
সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ''এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকরা ছিলেন। কিন্তু কোনো কিছু বলার মতো দেখেননি। শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে বহু দেশ। সারা দুনিয়া বলছে, একটা ভালো নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে একটা দল প্রশংসা করতে পারে না।''
ওবায়দুল কাদের বলেন, ''শেখ হাসিনা স্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করে দেশের গণতন্ত্র আরও দৃঢ় করেছেন। বর্তমান নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। যার কারণে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থীকেও শোকজ করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটা স্বাধীন কমিশন গঠিত হয়েছে, যা প্রশংসার দাবিদার।''
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ''বিএনপির মানুষ নেই, তাই নির্বাচনে এলে হেরে যাবে। চরম হতাশগ্রস্ত শিবিরে পরিণত হয়েছে বিএনপি। যে দলের মধ্যে গণতন্ত্র নেই, সেই দল কীভাবে দেশের মানুষকে গণতন্ত্র দেবে। এই বিএনপি তাদের সাত ধারা বাতিল করেছিল। এই বিএনপি অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে নেতা বানিয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বানাতে বিএনপি তাদের সাত ধারা বাতিল করেছে।''
বিএনপির সমালোচনা করে কাদের বলেন, ''বিএনপি নিজেদের অফিসে তালা মেরে বলে সরকার তাদের অফিসে লাগিয়েছে। আবার তাদের অফিসের তালা তারাই ভেঙেছে। তারা অফিসে তালা লাগাতে পারে আবার ভাঙতেও পারে, তবে সংবিধান ভাঙা বিএনপির অফিসের তালা ভাঙার মতো না। '
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ''যাকে নিয়ে আপনারা (বিএনপি) আমাদের কত রং দেখালেন, কত জাদুই বা দেখাইলেন, সেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাহেব তিনি (আওয়ামী লীগকে) অভিনন্দন জানিয়েছেন। এখন কাকে নিয়ে খেলবেন?''
তিনি বলেন, ''বিএনপি এখন স্বপ্ন দেখছে কখন ভিসা নীতি প্রয়োগ হবে, কখন ভিসা নিষেধাজ্ঞা আসবে। এ জন্য তাদের কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।''
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে কাদের বলেন, ''নির্বাচনী ট্রেন বন্ধ হয়ে গেছে। আগামী পাঁচ বছর পর এই ট্রেন চালু হবে।''
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে যৌথসভার আয়োজন করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা।