ডিমের বাজারে কারসাজি; ডায়মন্ড এগ ও সিপিকে সাড়ে তিন কোটি টাকা জরিমানা
পারস্পরিক যোগসাজশের মাধ্যমে অস্বাভাবিকভাবে ডিমের দাম বাড়ানোর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুই কোম্পানিকে সাড়ে তিন কোটি টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন (বিসিসি)।
এর মধ্যে ডায়মন্ড এগ লিমিটেডকে আড়াই কোটি এবং সিপি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডকে এক কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
গতকাল (বুধবার) এ মামলার রায় প্রকাশ করে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ডিম ও মুরগির বাজারে হঠাৎ করেই অস্থিরতা তৈরি হয়। এ সময় প্রতি হালি ডিম ৫৫ থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হতে থাকে। এভাবে প্রায় ১৫ দিন বাজার অস্থির থাকে। অভিযোগ উঠে এই অস্থিরতা তৈরির পেছনে ১০-১২টি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান যোগসাজস করে দাম বৃদ্ধি করে বাড়তি মুনাফা তৈরি করছে।
শুধু ডিমই নয়, সে সময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব তুলে ধরে ডিম, মুরগি, সাবান-ডিটারজেন্ট, চাল, আটা, ময়দাসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকারী বড় বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রতিযোগিতা কমিশন ৪৪টি মামলা দায়ের করে। এর মধ্যে ডিম উৎপাদনকারী ও বাজারজাতকারী ছয়টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
দীর্ঘ সময় ধরে শুনানি ও নিজস্ব অনুসন্ধানের ভিত্তিতে ডিম উৎপাদনকারী দুটি প্রতিষ্ঠানের মামলার রায় ঘোষণা করলো প্রতিষ্ঠানটি।
রায়ের আদেশে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সিপি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড ও ডায়মন্ড এগ সমধর্মীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়ে পরোক্ষভাবে তাদের উৎপাদিত ডিমের বিক্রিয় মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি করেছে। একইভাবে তাদের উৎপাদিত ডিমের সরবরাহ ও বাজার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। যা প্রতিযোগিতা আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অভিযুক্ত দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা হওয়ায় সিপি বাংলাদেশকে এক কোটি টাকা এবং ডায়মন্ড এগকে আড়াই কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
কোম্পানি দুটি পারস্পরিক যোগসাজশের মাধ্যমে ডিমের দাম বাড়িয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। যে কারণে প্রতিযোগিতা আইনের ১৫ ধারায় এই দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে কোম্পানি দুটি এই রায়ের বিষয়ে রিভিউ বা আপিল আবেদন করতে পারবে।
ডায়মন্ড এগ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কায়সার আহমেদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "রায়ের কপিটি এখনো আমরা পাইনি। সেটা পেলে অ্যানালাইসিস করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব আপিল করবো কি-না।"
এদিকে সিপি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) ডাঃ মোঃ আকরাম হোসেন টিবিএসকে বলেন, "রায়ের বিষয়টি আমাদের আইনজীবীর মাধ্যমে অ্যানালাইসিস করে তারপরই আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করবো।"