গাজায় গণহত্যা বন্ধে আইসিজের নির্দেশকে স্বাগত জানালো বাংলাদেশ
গাজায় গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড (অ্যাক্টস অভ জেনোসাইড) প্রতিরোধ করতে ইসরায়েলের ক্ষমতার মধ্যে থাকা সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)।
আদালতের এই রায়কে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে। এ ছাড়া জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের চালানো গণহত্যার বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলায় সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ, শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পাঁচ ব্রিটিশ পার্লামেন্টেরিয়ানের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এসব জানান। তিনি বলেন, "আমরা দক্ষিণ আফ্রিকার আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে আইসিজের আদেশকে স্বাগত জানাই। আমরা ইতোমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার মামলাকে সমর্থন করেছি।"
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, "আমরা বিশ্বাস করি, আইসিজের এই আদেশ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বা মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকলে তা প্রতিরোধে সহায়ক হবে।" একইসাথে দক্ষিণ আফ্রিকাকে যেকোনো সহায়তা দিতে বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে আদালত তার রায়ে বলেন, ইসরায়েলকে নিশ্চিত করতে হবে যেন তার বাহিনী গণহত্যা না চালায় এবং কথিত গণহত্যার প্রমাণ সংরক্ষণ করা হয়। এছাড়া গণহত্যার প্রত্যক্ষ উসকানি প্রতিরোধ এবং এ ধরনের উসকানির জন্য শাস্তির ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেন বিচারক।
আদালতের রায়ের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এটি আইসিজে'র আদেশকে স্বাগত জানিয়েছে। এ আদেশগুলোকে কোনো রাষ্ট্রই আইনের ঊর্ধ্বে নয় তার 'গুরুত্বপূর্ণ অনুস্মারক' বলে অভিহিত করেছে মন্ত্রণালয়।
এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিওবার্তায় বলেছেন, ইসরায়েলের এ যুদ্ধ 'একটি অন্যতম ন্যায়যুদ্ধ'।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল দেশ আন্তর্জাতিক আইন মেনে নিজেকে এবং তার নাগরিকদের রক্ষা করতে থাকবে।
আইসিজে-তে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষ থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়। সেখানে তেল আবিবের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগ আনে দেশটি।
দক্ষিণ আফ্রিকা এ রায়কে আন্তর্জাতিক আইনের শাসনের জন্য 'নির্ধারণকারী বিজয়' বলে অভিহিত করেছে।
আইসিজেকে দ্রুত রায়ের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে দেশটির সরকার বলেছে, এটি অস্থায়ী ব্যবস্থাকে স্বাগত জানায়। দক্ষিণ আফ্রিকা আন্তরিকভাবে আশা করে যে, ইসরায়েল আদালতের আদেশ পালনে অনীহা দেখাবে না।
প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় এটি আরও বলেছে, এ রায়টি ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায়বিচারের লড়াইয়ে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি আদালতের সিদ্ধান্তকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে অভিহিত করে বলেন এ রায় ইসরায়েলকে বিচ্ছিন্ন করতে এবং গাজায় তাদের অপরাধ প্রকাশে অবদান রাখবে।
তিনি রয়টার্সকে বলেন, 'আদালতের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য আমরা দখলদারদের (ইসরায়েল) বাধ্য করার আহ্বান জানাই।'
এ মামলায় শুনানি শুরু হয় গত ১১ জানুয়ারি। যদিও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগকে মিথ্যা আখ্যায়িত করে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।