শূকরের খামার থেকে রেকর্ড ২২ টন কোকেন জব্দ করল ইকুয়েডর
নিজেদের ইতিহাসে কোনো একক স্থান থেকে কোকেনের সবচেয়ে বড় মজুত জব্দ করেছে ইকুয়েডর। গত রোববার এ মজুত ধরা পড়ে।
দেশটির উপকূলীয় শহর লস রিওসের এস্তেরো লাগার্তো এলাকার একটি শূকরের খামার থেকে এ মজুত জব্দ করা হয়।
৭৩৩টি পাটের ব্যাগ থেকে মোট ২২ টন কোকেন হাইড্রোক্লোরাইড জব্দ করে ইকুয়েডর কর্তৃপক্ষ। ব্যাগগুলোর গায়ে এগুলোর গন্তব্যস্থলে যাওয়া এয়ারলাইনের লেবেল লাগানো ছিল।
পুলিশ কমান্ডার সিজার জাপাতা জানান, এসব ব্যাগে আইবেরিয়া, কেএলএম, কাতার, এবি, জেইটি২সহ ৬টি বিভিন্ন এয়ারলাইনের লোগো সাঁটিয়ে রাখা হয়েছিল।
গত রোববার (২১ জানুয়ারি) ইকুয়েডরের সশস্ত্র বাহিনীর প্রায় ১৫০ জন সদস্য তাদের অভিযান শুরু করে। সকালে শুরু হয়ে অভিযান চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
প্রথমে বেশ কয়েকজন সৈন্য মাটিতে পুঁতে রাখা ১০ টন কোকেন খুঁজে পায়। কয়েক ঘণ্টা ধরে মাটির চার মিটার গভীর পর্যন্ত খুঁড়ে এসব মাদকদ্রব্য বের করে আনা হয়। বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারে এ পরিমাণ কোকেনের দর প্রায় এক বিলিয়ন ডলার।
অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে একটি নর্দমা ধরে এগিয়ে গিয়ে মাটির তলায় লুকোনো আরও ১২ টন কোকেন হাইড্রোক্লোরাইড খুঁজে পান সৈন্যরা। সেনারা ১২টি রাইফেল এবং পাঁচ হাজারের বেশি রাউন্ডও উদ্ধার করেন।
কোকেনের এত বড় মজুত আবিষ্কারের পর ইকুয়েডরের সেনাবাহিনীর এ বিষয়ক তদন্ত আরও জোরদার হয়েছে। সেনাবাহিনীর বিশ্বাস, ইকুয়েডর মাদকদ্রব্যের কেবল ট্রানজিট নয়, দেশটির ভেতরেই মাদক তৈরির অনেকগুলো গবেষণাগার আছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মাদক জব্দের এ সাফল্য ইকুয়েডরের সামরিক গোয়েন্দা দপ্তরের পর্যবেক্ষণ ও নজরদারির মাধ্যমে করা ছয় মাসের তদন্তের ফল। যদিও এসব কোকেনের মালিক কে তা এখনো জানতে পারেনি এটি। জাপাতা বলেন, 'এ কোকেন কার তা জানতে আমরা কাজ করছি।'
জাতিসংঘের অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম-এর সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ কোকেন জব্দ হওয়া দেশ হলো ইকুয়েডর। গত তিন বছরে দেশটিতে ৫৫০ টনের মতো অবৈধ কোকেন জব্দ করা হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন গ্যাংয়ের মধ্যকার সংঘর্ষের অন্যতম কারণ আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান।