প্রীতি উরাংয়ের মৃত্যু: রিমান্ড শেষে ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক ও তার স্ত্রী কারাগারে
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কিশোরী গৃহকর্মীর মৃত্যুর মামলায় ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মোহাম্মদপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপ-পরিদর্শক হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাব-ইন্সপেক্টর নাজমুল হাসান ৪ দিনের রিমান্ড শেষে আসামিদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, কারাগারে আটক রাখার আবেদনে বলা হয়, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকার পুলিশের কাছে যেসব তথ্য দিয়েছেন, সেগুলো যাচাই-বাছাই করার জন্য সময় প্রয়োজন। এজন্য আসামিদের কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন।
এর আগে, গত ৭ জানুয়ারি আদালত আসামিদের রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তাদের তিন দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন আদালত।
এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসা থেকে পড়ে মারা যান মৌলভীবাজারের এক চা শ্রমিকের মেয়ে প্রীতি উরাং।
এ ঘটনায় পরদিন তার বাবা লোকেশ উরাং বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় সাংবাদিক আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারকে আসামি করে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বাদী লোকেশ উরাং জানান, মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোড এলাকার ২/৭ নম্বর অ্যাপার্টমেন্টের অষ্টম তলা থেকে ফ্ল্যাটের ড্রয়িংরুমের জানালায় সেফটি বার না থাকায় প্রীতি পড়ে যায়। তিনি আরও বলেন, গত বছর ৪ আগস্ট অনুরূপ আরেকটি ঘটনায় জানালা থেকে পড়ে গিয়ে আরও একজন গৃহকর্মী গুরুতর আহত হয়েছিল।
লোকেশ বারবার এ ধরনের দুর্ঘটনার জন্য বাড়ির মালিক ও বাসিন্দাদের অবহেলা এবং অসতর্কতাকে দায়ী করেছেন। এছাড়া এ ধরনের ঘটনার মূল কারণ হিসেবে জানালায় সেফটি বার না থাকার বিষয়টি জোর দিয়ে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এছাড়া মামলার নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের তাদের জানালায় সেফটি বারের অনুপস্থিতি এবং এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তির প্রকৃতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা সন্তোষজনক কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও নিহতদের বিচারের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ করে আসছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।