খতনা করাতে গিয়ে ফের শিশুর মৃত্যু: ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
গত মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খতনা করার সময় এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুর পর এ ধরনের অবহেলার পুনরাবৃত্তি রোধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. সামন্ত লাল সেন।
এক বিবৃতিতে আজ বুধবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'এ ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। কয়েকদিন আগেও আমরা একই ধরনের একটি ঘটনা লক্ষ্য করেছি। এটা খুবই দুঃখজনক যে, আমাদের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু ব্যক্তি যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কোনো অবস্থাতেই এ ধরনের অবহেলা বা দায়িত্বের প্রতি অবহেলা সহ্য করা হবে না আর।'
রাজধানীর মালিবাগে জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আহনাফ তাহমিন আইহামের (১০) মৃত্যুর ঘটনায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসবেন।
দোষী প্রমাণিত হলে শুধু স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির ওপরই কড়াকড়ি নয়, এই ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতেও সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'স্পষ্ট বার্তা দিতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে কোনো প্রতিষ্ঠান ভবিষ্যতে এ ধরনের গুরুতর দায়িত্বে অবহেলা করার সাহস না পায়।'
ড. সামন্ত আরও জানান, চিকিৎসকদের চিকিৎসায় গাফিলতি পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খতনা করার সময় অননুমোদিত অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহারের কারণে আহনাফের মৃত্যুর পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ইতোমধ্যে জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারটি সিলগালা করে দিয়েছে।
এ ঘটনায় এহনাফের বাবা বাদী হয়ে হাতিরঝিল মডেল থানায় চিকিৎসক এস এম মুক্তাদির ও তিনজনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, মঙ্গলবার রাতে অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জন এসএম মুক্তাদিরের তত্ত্বাবধানে আহনাফের বাবা-মা তাকে খতনার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করান। অস্ত্রোপচারের জন্য রাত ৮টার দিকে আহনাফকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। ঘণ্টাখানেক পর খবর আসে আহনাফ মারা গেছে।
এর আগে গত ৮ জানুয়ারি ঢাকার সাঁতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনা করার সময় আয়ান নামে পাঁচ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়।
আয়ানের বাবা মো. শামীম আহমেদ অভিযোগ করেন, খতনার জন্য অজ্ঞান করা হয়েছিল শিশু আয়ান আহমেদকে। খতনা করানোর ১১ ঘণ্টায় পরও তার জ্ঞান না ফিরলে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে এনে লাইফসাপোর্টে রাখা হয়। সাত দিন সেখানে থাকার পর গত ৮ জানুয়ারি আয়ান মারা যায়।