পাঞ্জাবের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী হলেন মরিয়ম নওয়াজ
পাকিস্তানের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ (৫০) সোমবার দেশটির সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন।
বাবার রাজনৈতিক উত্তরাধিকারী মরিয়ম পাঞ্জাবের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী।
পাঞ্জাব পরিষদের স্পিকার মালিক আহমেদ জানিয়েছেন, ৩৭১ আসনের প্রাদেশিক পরিষদে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এর প্রার্থী মরিয়ম মরিয়ম ২২০ জন এমপির ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
পিএমএল-এনের প্রতিদ্বন্দ্বী ও ইমরান খানের দলের জোট সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের (এসআইসি) প্রার্থী আফতাব খান নির্বাচন বর্জন করেন। তাই তিনি কোনো ভোট পাননি।
ইমরান খান ও তার মিত্ররা অভিযোগ করেছেন, ৮ ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে তাদের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কারচুপি করা হয়েছিল। যদিও দেশটির নির্বাচন কমিশন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
নির্বাচনে জয়লাভের পর সংসদে দেওয়া ভাষণে মরিয়ম বলেন, 'আমি হতাশ যে বিরোধীরা এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উপস্থিত নেই।'
তিনি আরও জানান, বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য তার দরজা খোলা ছিল।
মরিয়ম বর্তমানে পিএমএল-এনের সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি নওয়াজ শরিফের বড় মেয়ে এবং শাহবাজ শরিফের ভাতিজি।
তিনি পাঞ্জাব থেকে শরিফ পরিবারের চতুর্থ মুখ্যমন্ত্রী ও এমপি। একই সঙ্গে তিনি এই পরিবারের প্রথম নারী এমপিও।
পাকিস্তানের ২৪১ মিলিয়ন জনসংখ্যার ৫৩% এর বসবাস এই প্রদেশে এবং ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের জিডিপির ৬০ শতাংশ আসে এখান থেকে।
তার বাবা নওয়াজ শরিফ ও ছোট ভাই শfহবাজ শরিফও পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। শfহবাজের ছেলে গত বছর কয়েক মাস এই পদে ছিলেন।
চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে ডাকা পার্লামেন্টের অধিবেশনে শfহবাজ দ্বিতীয়বারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হতে পারেন।
জ্বালাময়ী বক্তা
মরিয়ম নওয়াজ তার জ্বালাময়ী বক্তৃতা এবং বিশাল জনসমাবেশে আয়োজনের জন্য পরিচিত।
২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি প্রথমবারের মতো পিএমএল-এনের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
২০১৭ সালে তিনি ও তার বাবা সম্পদ গোপন করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন এবং তাদের দুজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়।
২০১৯ সালের শেষের দিকে তার বাবা চিকিৎসার জন্য লন্ডনে চলে যাওয়ার পরে, তিনি খানের সরকার, দেশের শক্তিশালী সামরিক বাহিনী এবং বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রচারণার নেতৃত্ব দেন।
এজন্য তিনি তার দল ও পরিবারকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর অভিযোগ করেছিলেন।
এসময় তিনি পাকিস্তানে পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি নিয়ে খানসহ বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন।
এছাড়া, সামাজিকভাবে রক্ষণশীল মুসলিম দেশটিতে একজন নারী হিসেবে রাজনীতিতে আসার কারণেও তাকে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।
১৯৭৩ সালের ২৮ অক্টোবর পাকিস্তানের লাহোরে জন্ম হয় মরিয়মের। তিনি পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর অর্জন করেছেন।
তিনি সেনা কর্মকর্তা সফদার আওয়ানকে বিয়ে করেন। তাদের এক ছেলে, দুই মেয়ে ও এক নাতনি রয়েছে।
১৯৯২ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নওয়াজের দ্বিতীয় মেয়াদে ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আওয়ান।
সংক্ষেপিত ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি