ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলা থেকেই অব্যাহতি পেলেন জবি শিক্ষার্থী খাদিজা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা আরেকটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুটি মামলা থেকেই খাদিজাকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত তাকে এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।
আজ রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা মামলাটির অভিযোগ গঠনের জন্য শুনানির দিন নির্ধারিত ছিল। শুনানি শেষে অভিযোগ গঠন করার মতো উপাদান না থাকায় খাদিজাকে অব্যাহতি দেন আদালত। সেইসঙ্গে মামলার আরেক আসামি অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের অংশটি পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি একই আদালতে কলাবাগান থানায় দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ছিল। ওই দিন শুনানি শেষে আদালত ওই মামলায় অভিযোগ গঠনের মতো উপাদান না থাকায় খাদিজাকে অব্যাহতি দেয়।
অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে ২০২০ সালে অক্টোবরে খাদিজাতুল কুবরা এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় আলাদা দুটি মামলা করে পুলিশ।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে করা দুটি মামলার এজাহারের অভিযোগ এবং বর্ণনা প্রায় একইরকম। একটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম এবং অন্যটির কলাবাগান থানার এসআই আরিফ হোসেন।
দুই বাদীই দায়িত্ব পালনকালে মুঠোফোনে ইউটিউবে ঘুরতে ঘুরতে খাদিজাতুল কুবরা ও মেজর (অব.) দেলোয়ার হোসেনের ভিডিও দেখতে পান। তারপর দুজনই নিজ নিজ থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন।
নিউমার্কেট থানার মামলায় এসআই খাইরুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ২৫ মিনিটের সময় মুঠোফোনে মেজর (অব.) দেলোয়ারের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও দেখতে পান। 'হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ' শিরোনামের ভিডিওর সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরার উপস্থাপনায় দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বৈধ গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন।
মামলাটি রেকর্ড করা হয় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে। মামলার এজাহারের সঙ্গে তিন পাতার স্ক্রিনশট ও ভিডিও-সংবলিত সিডি সংযুক্ত করা হয়।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়, খাদিজাতুল কুবরা ও দেলোয়ার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের বৈধ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মনগড়া, বানোয়াট, মিথ্যা, মানহানিকর অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন। আসামিরা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টির অপচেষ্টা সহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের প্রয়াস চালাচ্ছেন।
দীর্ঘ ১৫ মাস কারাভোগের পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান খাদিজা। পরে ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।