বাসায় করোনা আক্রান্ত মেয়ে থাকার পরও রোগী দেখেছেন চিকিৎসক
একই বাসায় চিকিৎসক মেয়ে করোনায় আক্রান্ত থাকার পরও নিজস্ব চেম্বারে ডায়বেটিক রোগীদের টানা ১১ দিন চিকিৎসা দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের ডেপুটি চিফ ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. এফ এম এ জাহিদ। এখন তিনি নিজেই করোনায় আক্রান্ত। তার সঙ্গে তার স্ত্রীও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
ডা. জাহিদ রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ জুন ডা. জাহিদের মেয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। তারপর থেকেই তিনি বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। একই বাড়িতে মেয়ের সঙ্গে থাকেন ডা. জাহিদ, তার স্ত্রী ও ছেলে। রাজশাহী নগরীর আলুপট্টিতে ডা. জাহিদের সাত তলা ভবন রয়েছে। সেই ভবনের নিচতলায় তার প্রতিষ্ঠান রাজশাহী ডায়াবেটিক কল্যাণ কেন্দ্র। তার মেয়ে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও সেখানে তিনি প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ জন ডায়াবেটিক রোগী দেখেছেন। গত ৩ জুলাই তার মেয়ের দ্বিতীয়বার টেস্ট করানোর সময় তাদের পরিবারের সব সদস্যদের করোনা পরীক্ষা করা হয়। সেদিন ডা. জাহিদ ও তার স্ত্রীর পজিটিভ রিপোর্ট আসে। সেদিনও তিনি রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে ডা. জাহিদকে ফোন দেওয়া হলে তিনি বলেন, "আমার কোনো উপসর্গ নেই। তারপরও করোনা পজিটিভ এসেছে। আমি ও আমার স্ত্রী থাকি সাততলায়। আর মেয়ে, ছেলে ও সন্তানদের নানু থাকে ছয়তলায়। তবে মাঝে মাঝে খাবার টেবিলে গেছি। মাঝে মাঝে মেন্টাল বুস্ট-আপ করার চেষ্টা করেছি। সেখান থেকে হয়তোবা আসতে পারে। অথচ ছেলে ও তাদের নানুর করোনা আক্রান্ত হয়নি।"
রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া বিষয়ে তিনি বলেন, "মাস্ক পরেই রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছি। তাদের সমস্যা হলে তো হতো। এখনো কারো সমস্যা হয়নি।"
এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য বলেন, "বাসায় করোনা রোগী থাকলে তাকে অবশ্যই কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। চিকিৎসা দেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। তার টেস্ট করে দেখতে হবে। কোনো পজিটিভ রোগীর কন্টাক্ট ট্রেসিংয়ে আসলে তাদের অবশ্যই চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টিনে রাখতে হবে।"