বেইলি রোডে ভবনে আগুনে ভিকারুননিসার শিক্ষক ও তার মেয়ের মৃত্যু
গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাজধানীর বেইলি রোডে একটি বাণিজ্যিক ভবনে লাগা আগুনে অন্তত ৪৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাতি শাখার শিক্ষক লুৎফুন নাহার করিম (লাকী) এবং তার মেয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্রী ও ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতিন তাজরী।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের মরদেহ আসে। এ সময় স্ত্রী-মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন গোলাম মহিউদ্দিন।
মহিউদ্দিন বিলাপ করতে করতে জানান, তার স্ত্রী দাঁতের ব্যথায় ভুগছিলেন। দাঁত দেখাতে হাসপাতালে যান মেয়েকে নিয়ে। ফেরার পথে কাচ্চি খেয়ে আসার পরামর্শ দেন তিনি নিজেই। এখন স্ত্রী-মেয়ের মৃত্যুর জন্য তিনি নিজেকে অপরাধী মনে করছেন।
মা ও মেয়ের অকাল অকাল মৃত্যুতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে শোক প্রকাশ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরি। আজ বাদ জুমা দুপুর দুইটায় প্রতিষ্ঠানটির মূল শাখার কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে শিক্ষকের নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে আজ (১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ৩৪ জনের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন নিউমার্কেট জোন পুলিশের সহকারী কমিশনার রিফাতুল ইসলাম। তিনি বলেন, "পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হচ্ছে।"
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাত ১টা পর্যন্ত ভবনটি থেকে ৪২ জনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে আরও ৭৫ জনকে।
এর আগে রাত ১১টা ৫০ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ওই ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান কর্মকর্তারা।
ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এছাড়া উদ্ধার অভিযানে যোগ দেন আনসার সদস্যরাও।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, রাত ৯টা ৫০ মিনিটে তারা আগুনের খবর পান। প্রথম ইউনিট রাত ৯টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে।