সন্তানকে কিডনি দিতে কলকাতায় গিয়ে বাংলাদেশি মা-ছেলে করোনায় আক্রান্ত, দুই লড়াই-ই জিতলেন
অসুস্থ সন্তানকে নিজের একটি কিডনি দান করতে বাংলাদেশের এক মা ও তাঁর ছেলে অপারেশনের জন্য গিয়েছিলেন কলকাতা। তবে চিকিৎসা শুরুর আগেই মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে ভারতে লকডাউন শুরু হয় যার ফলে আটকে যায় অপারেশন। এরমধ্যে নতুন করে অপারেশনের তারিখ ঠিক হলে এই মা-সন্তান দুজনেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যান। তবে দীর্ঘ চিকিৎসার পর করোনামুক্তি শেষে তারা কিডনি প্রতিস্থাপনও করেছেন। মায়ের থেকে পাওয়া কিডনি নিয়ে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন বাংলাদেশি ওই যুবক। মা সন্তান দুজনেই এখন ভালো আছেন।
কলকাতার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অক কার্ডিয়্যাক সায়েন্স-এর চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, "কিডনির সমস্যার চিকিৎসা করাতে মা কল্পনা দেবী ও কয়েক জন আত্মীয়ের সঙ্গে গত জানুয়ারি মাসে কলকাতায় এসেছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক উত্তম কুমার ঘোষ (৩৮)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অক কার্ডিয়্যাক সায়েন্স-এর (RTIICS) বিশেষজ্ঞরা মা ও ছেলেকে পরীক্ষা করার পরে গত মার্চ মাসে অস্ত্রোপচারের দিন ধার্য করেন। কিন্তু এর পরেই দেশজুড়ে লকডাউন জারি হলে সেই পরিকল্পনা বানচাল হয়।"
সেখানে বলা হয়, "পরে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকায় আপৎকালীন অঙ্গ প্রতিস্থাপনমূলক অস্ত্রোপচার অনুমোদন পেলে আশার আলো দেখতে পান উত্তমরা। কিন্তু এমনই কপাল, ঠিক তখনই পরীক্ষায় উত্তম ও কল্পনাদেবীর কোভিড পজিটিভিটি ধরা পড়ে। এর পর উত্তম ও কল্পনা দেবীকে কোভিড চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় এম আর বাঙুর হাসপাতালে।"
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অক কার্ডিয়্যাক সায়েন্স এর নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক ডি এস রায় বলেন, "গত ১২ জুন তাদের বাঙুর হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। এর পরেও আমরা সাড়ে তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করি এবং তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলি। সেই পর্ব মিটলে দুই দফা পরীক্ষায় তাদের কোভিড মুক্তি নিশ্চিত হলে কিডনি প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।"
হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, অস্ত্রোপচার সফল হওয়ার পরে মা ও ছেলে দুজনেই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। হাসপাতাল থেকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হলেও পরবর্তী দুই মাস কলকাতায় থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ডা. ডি এস রায় বলেন, "উত্তম আমাদের আশা অনুযায়ী ভালোভাবেই সুস্থ হয়ে উঠছেন। তাকে প্রয়োজনীয় পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে আসতে বলা হয়েছে। মা ও ছেলেকে আরও দুই মাস এখানে থাকতে বলা হয়েছে।"