বাড়তি ভাড়া চাওয়া চালক-সহকারীকে যাত্রীরা পিটিয়ে মারেনি, মৃত্যুর ভিন্ন কারণই জানাল পুলিশ
আশুলিয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কে কেন্দ্র করে যাত্রীদের মারধরে বাসচালক ও সহকারী মারা যাননি। বাস থেকে নেমে যাত্রী ডাকাডাকির সময় দুই বাসের মাঝখানে পড়ে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে।
সোমবার (৮ এপ্রিল) ঢাকার আশুলিয়ায় ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে যাত্রীদের মারধরে ইতিহাস পরিবহনের একজন বাস চালক ও একজন কন্ডাক্টর নিহত হওয়ার কথা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল।
ঘটনার দিন বাসচালকের সহকারী নিহত মো. হৃদয়ের ভাই আতিকুর রহমান দাবি করেছিলেন, তিনি ওইদিন বিকেল চারটায় এ ঘটনার খবর পান। পরে বাসের চালকের আরেক সহকারীর কাছ থেকে জানতে পারেন, ইতিহাস পরিবহনে ঢাকার মিরপুর থেকে গাজীপুরের চন্দ্রা পর্যন্ত ভাড়া ৮০ টাকার মতো। ঈদ উপলক্ষে ১০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছিল। একজন যাত্রী বাসে ওঠার পর ১০০ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। বাসটি ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ডিইপিজেড) এলাকায় এসে যানজটে আটকা পড়ে। তখন হৃদয়কে বাস থেকে নামিয়ে হত্যা করা হয়। চালক সোহেল রানা ওরফে বাবুকে মারধর করা হয়। পরে দুজনকে গাজীপুরের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয়।
তবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে পুলিশ তদন্তের সময় জানতে পারে যে, ঘটনার সময় ইতিহাস বাসের পাশে দুজন ধাক্কাধাক্কি করছিলেন। এ সময় উত্তরবঙ্গগামী একটি বাস ইতিহাস বাসের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মাঝখানে ওই দুজন চাপা পড়েন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এদিকে সোমবার রাতে ওই বাসচালকের আরেকজন সহকারী হিসেবে পরিচয় দেওয়া আবদুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। আবদুর রহমান পুলিশের কাছে দাবি করেন, অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এক যাত্রী ও তাঁর পরিচিত ব্যক্তিদের মারধরে ওই দুজন নিহত হয়েছেন।
কিন্তু, তদন্তে নেমে প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য ও সিসিটিভি ফুটেজে তাঁর বক্তব্যের স্বপক্ষে প্রমাণ মেলায়– পুলিশ আবারো আবদুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এবার আবদুর রহমান বলেন যে ঘটনার আগে কিছু সময়ের জন্য তিনি গাড়িতে চালকের আসনে বসেছিলেন। চালক ও চালকের অপর সহকারী গাড়ির গেট থেকে নেমে যাত্রীদের ডাকছিলেন। এ সময় উত্তরবঙ্গগামী একটি বাস তাঁদের দুজনকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে ওই দুজনের মৃত্যু হয়।