খালি পায়ে ২০০০ মাইলেরও বেশি পথ হেঁটে রেকর্ড!
পোল্যান্ডের এক ব্যক্তি খালি পায়ে ৩ হাজার ৪০৯.৭৫ কিলোমিটার (দুই হাজার ১১৮.৭২ মাইল) পথ হেঁটে ও দৌড়ে পাড়ি দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছেন। তার নাম পাওয়েল ডুরাকউইকজ (৪৫)। এর মধ্য দিয়ে তিনি একটি দাতব্য সংস্থার জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন।
পাওয়েলের যাত্রা শুরু হয় স্পেন সীমান্তের কাছে ফ্রান্সের দক্ষিণ দিক থেকে। সম্পূর্ণ যাত্রায় তিনি আইবেরিয়ান উপদ্বীপের চারপাশে ৩ হাজার ৪০৯.৭৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেন। স্পেনের দক্ষিণে সান হোসেতে পৌঁছানোর পর তার যাত্রা শেষ হয়।
এর মধ্যে দিয়ে পাওয়েল ২০২১ সালে নেদারল্যান্ডসের অ্যান্টোনিয়াস নুটেনবুমের করা রেকর্ড ভাঙলেন। নুটেনবুমের চেয়ে তিনি ৩৯০ কিলোমিটার (২৪২.৩ মাইল) পথ বেশি অতিক্রম করেছেন।
পাওয়েলের এ অভিযান শেষ করতে করতে সময় লেগেছে ৬ মাস। প্রতিদিন তিনি ২০ থেকে ৫০ কিলোমিটার (১২-৩১ মাইল) পথ পাড়ি দিতেন।
যাত্রার প্রথম মাসে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় গরম পিচঢালা সড়কে হাঁটতে গিয়ে পা পুড়িয়ে ফেলেন পাওয়েল। পায়ের কিছু জায়গায় কেটেও যায়। ক্ষত সারাতে তিনি সেখানে অ্যালোভেরা জেল লাগান। পরে দ্রুত রাস্তা শেষ করতে কিছু পথ দৌড়েও অতিক্রম করেন তিনি। তবে পাওয়েল জানান, পায়ে গুরুতর কোনো আঘাত বা ক্ষত হয়নি তার।
পাওয়েল সিসিলিয়ানের গ্রামাঞ্চলে বসবাস করেন। সেখানে তিনি গত ছয় বছর ধরে বেশিরভাগ সময়ই খালি পায়ে হেঁটেছেন। আর অভিযানের জন্য প্রশিক্ষণের সময়টাতে পাওয়েল গত পাঁচ মাসে প্রতিদিন ১০ কিলোমিটার করে হেঁটেছেন ও দৌড়েছেন।
পাওয়েল বলেন, অভিযানের সবচেয়ে কঠিন দিকটি ছিল আগের রেকর্ড ভাঙার পর হাঁটা ও দৌড়ানো চালিয়ে যেতে মনোবল খুঁজে পাওয়া।
পথে তিনি কিছু বাধার সম্মুখীনও হয়েছেন। যেমন, বেশ কয়েকবার পুলিশ তার পথ আটকেছে। আবার পথের কোথাও কোথাও পথচারীদের হাঁটার ব্যবস্থা ছিল না। এ কারণে তাকে ব্যস্ত সড়কের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে।
পুরো যাত্রায় পাওয়েলের সঙ্গে ছিলেন তার এক বন্ধু। তিনি একটি ভ্যান নিয়ে পাওয়েলকে অনুসরণ করেছেন। এ ভ্যানেই রাতে ঘুমিয়েছেন পাওয়েল। ভ্যানের ওপরই রান্না করে খেয়েছেন। খাবার হিসেবে খেয়েছেন টাটকা ফল ও শাকসবজি।
পাওয়েল দাতব্য সংস্থা ডায়মন্ড সোউল ফাউন্ডেশনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে চ্যালেঞ্জটি নিয়েছিলেন। তিনি সংস্থাটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা। সংস্থাটি মানুষকে আসক্তি থেকে ফিরিয়ে আনতে ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করে থাকে।
পাওয়েল এ চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে এটাও দেখাতে চেয়েছেন যে একজন সাধারণ মানুষও চাইলে অসাধারণ কিছু করতে পারে যদি সে পর্যাপ্ত পরিশ্রম, আত্ম-শৃঙ্খলা ও আন্তনিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
বিশ্ব রেকর্ড গড়ার পর তিনি বলেছিলেন, 'এটি এক দারুন অনুভূতি। আমি আমার শৈশবের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছি।'
অনুবাদ: রেদওয়ানুল হক