ফরিদপুরে দুর্ঘটনা: দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য ত্রাণের টিনের ব্যবস্থা করতে পারলেন না মিলন
ফরিদপুরে আজ মঙ্গলবার বাস ও পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে যে ১৪ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন রফিকুল ইসলাম মিলন মোল্যা নামের এক ব্যক্তি। তিনি তার এলাকার কিছু অসহায় পরিবারের জন্য ত্রাণের টিনের ব্যবস্থা করতে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। পথে দুর্ঘটনায় পরিবারের আরও তিন সদস্যসহ তিনি মারা যান।
মিলন ঢাকায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে লিফট অপারেটর পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ছত্রকান্দা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা তারা মিয়ার ছেলে।
নিহত অন্যরা হলেন মিলনের স্ত্রী সুমি বেগম, বড় ছেলে রুহান (৯), ছোট ছেলে হাবিব ছিনান (৬) এবং মিলনের নানি শাশুড়ি মর্জিনা বেগম।
নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কিছু দরিদ্র পরিবারের জন্য ত্রাণের টিনের ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন মিলন। সোমবার বিকালে তিনি বাড়িতে আসেন। আজ মঙ্গলবার তিনি ত্রাণের টিন সংক্রান্ত কাজ নিয়ে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন।
মিলনের মামাতো ভাই নুরুজ্জামান খসরু জানান, মিলনের সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরাও ছিল। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কাজ শেষে সেখান থেকেই পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে যাওয়ার কথা ছিল মিলনের।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা তারা মিয়ার তিন ছেলের মধ্যে মিলন মেজ ছিলেন। তার বড়ভাই ফরিদুল ইসলাম স্কুলশিক্ষক। আর ছোটভাই হাবিবুর রহমান মাস্টার্স পাস করে ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করছেন।
উল্লেখ্য, আজ সকালে ফরিদপুরে বাস ও পিকআপভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন আরও তিনজন।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. মোর্শেদ আলম জানান, "কানাইপুরের দিকনগর এলাকায় ইউনিক পরিবহনের একটি বাস ঢাকা থেকে যশোরের দিকে যাওয়ার পথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা এবং আহতদের প্রত্যেককে তিন লাখ টাকা দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার।