গাজায় ইসরায়েলি হামলার ৬ মাসে ১০,০০০ নারীর মৃত্যু; ১৯,০০০ শিশু অনাথ
গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলার ছয় মাসের বেশি পেরিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ১০,০০০ ফিলিস্তিনি নারী ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের নারী বিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেন।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানায়, নিহত ১০,০০০ নারীর মধ্যে অন্তত ৬,০০০ মা রয়েছেন। আর এই মায়েদের মৃত্যুর ফলে কমপক্ষে ১৯,০০০ ফিলিস্তিনি শিশু অনাথ হয়েছে।
শুধু তাই নয়, ইসরায়েলি বিমান হামলা ও স্থল অভিযান থেকে যেসব নারীরা বেঁচে গেছেন, তারা দিন পার করছেন অনাহারে। বেশিরভাগই হয়েছেন বাস্তুচ্যুত, বিধবা কিংবা সন্তানহারা।
সম্প্রতি প্রকাশিত ইউএন উইমেনের 'জেন্ডার অ্যালার্ট: স্কার্সিটি অ্যান্ড ফিয়ার'– শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলমান যুদ্ধটি যেন গাজার নারীদের বিরুদ্ধেই চলছে।
প্রতিবেদনে বিশুদ্ধ পানীয় জল, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ)-এর মতো মৌলিক পরিষেবাগুলোর অভাবের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। নারীদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, গোপনীয়তা ও মান-মর্যাদার বিষয়গুলোও তুলে ধরা হয়েছে সেখানে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গাজায় এক মিলিয়নেরও বেশি ফিলিস্তিনি নারী বর্তমানে ভয়াবহ খাদ্যাভাবে রয়েছেন। স্তন্যদানকারী মা এবং গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশুদ্ধ পানির অতিরিক্ত চাহিদা থাকলেও প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট সুবিধাও নেই তাদের। এমতাবস্থায় মারাত্মক ঝুঁকির মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন তারা।
ইউএন উইমেনের তথ্য অনুযায়ী, গাজার ৬ লাখ ৯০ হাজার নারী ও মেয়েদের জন্য প্রতি মাসে অন্তত ১০ মিলিয়ন স্যানিটারি প্যাড প্রয়োজন, যে চাহিদাও মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।
জেনেভায় এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে ইউএন উইমেন ইন আরব স্টেটসের আঞ্চলিক পরিচালক সুজান মিখাইল বলেন, "এখন পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি নারী নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে আনুমানিক ৬ হাজার মা রয়েছেন। বোমা হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া নারীরাও প্রতিনিয়ত অনাহার, অসুস্থতা এবং প্রচণ্ড ভয়ভীতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।"
"গাজার এই যুদ্ধ নিঃসন্দেহে নারীদের বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধে পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নারীদেরকেই সবচেয়ে ভারী মূল্য দিতে হচ্ছে", যোগ করেন তিনি।