টানা পঞ্চম দিনের মতো চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াল
টানা পঞ্চম দিনের মতো চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াল। শনিবার (২০ এপ্রিল) জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শনিবার চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ বেলা ৩টায় সর্বোচ্চ এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
গত কয়েকদিন ধরেই তাপপ্রবাহ চলছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী এই জেলায়। তীব্র গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সেখানকার জনজীবন।
এর আগে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দেশের ও মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়। এদিন ৪১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
তার আগের দিন বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এছাড়াও গত বুধবার (১৭ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং গত মঙ্গলবার বিকেলে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক তহমিনা নাসরিন বলেন, "টানা চার দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। শুক্রবার ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় দেশের এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টির কোন সম্ভবনা নেই। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমার সম্ভবনা নেই। প্রতিদিন জেলায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। একদিনের রেকর্ড পরের দিন ভেঙে যাচ্ছে। সূর্যের প্রখরতার কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর দেশে ৭২ ঘণ্টার সতর্কবার্তা দিয়েছে।"
চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ বাজারাপাড়ার বাসিন্দা জিয়াউর রহমান বলেন, "ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার কোন সুযোগ নেই। এত গরম পড়ছে, বলে বুঝানো যাবে না। শরীর জ্বলে যাচ্ছে সূর্যের প্রখরতার কারণে। বারবার পানি পান করলেও পিপাসা মিটছে না। কয়েক দিনের গরম অসহনীয়।"
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান মুন্সি বলেন, "স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সতর্ক স্বাস্থ্যবার্তা দিয়েছে। তাপপ্রবাহে সবাইকে নিয়ম মেনে চলতে হবে। নয় তো অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে যে কোন বয়সের মানুষ। হাসপাতালে গরমের কারণে ডায়রিয়াম, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সব বয়সের মানুষ। হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন রোগী বাড়ছে। অতিরিক্ত গরমের কারণে মানুষ হিটস্টোক এ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।"
এদিকে, চলমান তাপপ্রবাহের কারণে সারাদেশে সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আজ (২০ এপ্রিল) পৃথক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
এর আগে, চলমান তাপপ্রবাহে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অ্যাসেম্বলি বন্ধ করতে বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অ্যাসেম্বলি পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া না পর্যন্ত বন্ধ রাখার কথা বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।