মোহামেডানের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করেননি তামিমরা
ছক্কা নাকি আউট; এই দ্বিধায় নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন দুই অনফিল্ড আম্পায়ার সাথিরা জাকির জেসি ও এআইএম মনিরুজ্জামান। থার্ড আম্পায়ার বা টিভি রিল্পে না থাকায় সিদ্ধান্ত দেওয়ার উপায় পাচ্ছিলেন না তারা। পরে ফিল্ডার আবু হায়দার রনির সঙ্গে কথা বলে একপ্রকার অনুমান থেকেই মুশফিকুর রহিমকে আউট ঘোষণা করা হয়।
স্বভাবতই সিদ্ধান্তটি মনঃপূত হওয়ার কথা নয় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের। তখনই দলটির ক্রিকেটারদের শারীরিক ভাষায় তা বোঝা গেছে। পরে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হলো, যখন ম্যাচের পর মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করলেন না প্রাইম ব্যাংকের ক্রিকেটাররা। ম্যাচটি তারা হেরেছে ৩৩ রানে, সঙ্গে মুশফিকের আউট বিতর্ক আরও হতাশা বাড়িয়েছে দলটির।
বুধবার মিরপুরে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে প্রাইম ব্যাংকের ইনিংসের ৩৪তম ওভারে ঘটনাটি ঘটে। মোহামেডানের অফ স্পিনার নাঈম হাসানের অফ স্টাম্পের বাইরে করা ডেলিভারি টেনে উড়িয়ে মারেন মুশফিক। ডিপ মিড উইকেটে থাকা মোহামেডানের পেসার আবু হায়দার অনেকটা দৌড়ে লাফিয়ে অসাধারণ দক্ষতায় ক্যাচ নেন। কিন্তু বিসিবির সম্প্রচারিত ইউটিউব চ্যানেলের রিপ্লেতে দেখা যায় ডাইভ দিয়ে ওঠার সময় বাউন্ডারি সীমানা স্পর্শ করেছে তার পা।
ছক্কা নাকি আউট, এই দ্বিধায় খেলা বন্ধ থাকে মিনিট দশেক। আউট ভেবে মুশফিক সাজঘরের পথে হাঁটা শুরু করলে তাকে থামান আম্পায়ার, সীমানা ঘেঁষে ভেতরে অপেক্ষা করতে থাকেন তিনি। এ সময় ড্রেসিংরুম থেকে বাইরে বেরিয়ে আসেন প্রাইম ব্যাংকের ক্রিকেটার, কোচরা। বিসিবির ইউটিউব চ্যানেল থেকে ক্যাচের ওই দৃশ্যটি রিপ্লেতে বারবার দেখে আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলেন তামিম ইকবাল। এতে অবশ্য লাভ হয়নি, মুশফিককে আউট ঘোষণা করা হয়।
এই ঘটনায় যারপরনাই হতাশ প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। এ কারণেই মোহামেডানের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করেননি তাদের ক্রিকেটাররা। ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুম থেকে তামিম ছাড়া দলটির কেউ-ই বের হননি। তামিম বের হলেও তিনিও প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাত মেলাননি। অভিজ্ঞ এই ওপেনার দুই আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলে ফিরে যান ড্রেসিংরুমে।
মোহামেডানের জয়ে বড় ভূমিকা রনি তালকুদারের। ডানহাতি এই ওপেনার ১৩১ বলে ৮টি চার ও ৯টি ছক্কায় ১৪১ রানের দুর্বার ইনিংস খেলেন, যা তার ক্যারিয়ার সেরা। ম্যাচের পর সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে প্রাইম ব্যাংকের হাত না মেলানোর বিষয়টি নিয়ে হতাশ প্রকাশ করেন তিনি, আমরা তো মাঠেই ছিলাম। বাকিটা প্রাইম ব্যাংকের ব্যাপার। এটা (হ্যান্ডশেক না করা) উনাদের ব্যাপার, এটা নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।'
সীমানা ছুঁয়ে আবু হায়দারের নেওয়া ক্যাচটি সম্পর্কেও মন্তব্য করতে চাননি রনি, 'সেটা তো রনিই (আবু হায়দার) ভালো জানে। কারণ রনিই ক্যাচটা ধরেছে। রনির ওপরেই পুরোটা নির্ভর করবে। ও যে সিদ্ধান্তটা দেবে, সেটার ওপরেই…। কারণ এখানে তো ওইভাবে ক্যামেরা ছিল না। থার্ড আম্পায়ার যদি থাকতেন, তাহলে সেটা ভালোভাবে দেখতে পারতেন। এখন এটা খেলোয়াড়দের ওপরেই যায়।'
প্রযুক্তির ব্যবহার নেই, এসব ক্ষেত্রে কীভাবে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়? এমন প্রশ্নের উত্তরে এই ম্যাচের রেফারি ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য রকিবুল হাসান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ বিসিবির চ্যানেলে যেটা টেলিকাস্ট হচ্ছে, এটা টিভি টেলিকাস্ট নয়। এসব ক্ষেত্রে ফিল্ডার কী বলছেন, সেটা শোনা হয়। ফিল্ডারের সঙ্গে কথা বলে আম্পায়ার যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটাই চূড়ান্ত।'