চলতি বছরেই আসছে চীনের ভ্যাকসিন
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত ওষুধ প্রস্তুতকারক –সাইনোফার্মের গবেষণাধীন করোনাভাইরাস প্রতিষেধক চলতি বছরের শেষদিকেই বাজারে পাওয়া যাবে। দেশটির সরকারি গণমাধ্যম সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিটিক্যাল গ্রুপ (সাইনোফার্ম) এর চেয়ারম্যান লিউ জিংঝেন গত মঙ্গলবার গণমাধ্যমটিকে জানান, গত জুনের শেষদিক থেকে তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে ভ্যাকসিনটির। এ প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হলে, চলতি বছরের শেষদিকেই বাজারে উৎপাদিত ভ্যাকসিন ছাড়া হবে।
''আগামী তিন মাসের মধ্যে তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হবে। বর্তমানে এটি বাজারজাতকরণের চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে'' জানান লিউ জিংঝেন।
চীনের জাতীয় জৈব-প্রযুক্তি গ্রুপ- সিএনবিজি'র অঙ্গঃপ্রতিষ্ঠান বেজিং ইনস্টিটিউড অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস এবং উহান ইনস্টিটিউড অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টস নতুন করোনাভাইরাস প্রতিষেধকটি যৌথভাবে প্রস্তুত করেছে।
লিউ জানান, গবেষণা কেন্দ্র দুটি ব্যাপক মাত্রায় ভ্যাকসিন উৎপাদনের লক্ষ্যে সর্বাধুনিক সক্ষমতার অবকাঠামো নির্মাণ করেছে। পরীক্ষার তৃতীয় ধাপ শেষ হওয়ার পর খুব দ্রুত এসব স্থাপনায় ভ্যাকসিন উৎপাদন করা সম্ভব হবে। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের।
গত ২৩ জুন সংযুক্ত আরব আমিরাতে তৃতীয় স্তরের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করার বিষয়টি জানিয়েছিল সিএনবিজি। আবুধাবি সরকার ও স্থানীয় কৃত্রিম প্রযুক্তি নির্ভর স্বাস্থ্যসেবা কোম্পানি- জি৪২ হেলথকেয়ারের সহযোগিতায় এ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হচ্ছে। ১৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে প্রয়োগ করা হয়েছে একই ভ্যাকসিনের দুই ধরনের 'স্ট্রেইন'।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল ভ্যাকসিনটির দ্বিতীয় স্তরের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়, বলেও জানান লিউ। প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গত ৩০ মার্চ তিনি নিজেও ভ্যাকসিন ইঞ্জেকশন নিয়েছিলেন।
ভ্যাকসিনটির সুরক্ষা নিয়ে তার বক্তব্য, ''করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এর প্রভাব ছিল আদর্শ। এছাড়া, পরীক্ষামূলক টিকা নেওয়ার পর কারো দেহে তীব্র পার্শ্বঃপ্রতিক্রিয়াও দেখা যায়নি।''
সাইনোফার্মের সাম্প্রতিক ঘোষণা করোনাভাইরাস নির্মূলে নতুন আশা সঞ্চার করলো। বিশেষ করে, উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলো যখন ভাইরাস মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে, ঠিক তখনই চীনের উৎপাদিত ভ্যাকসিনের সরবরাহ এ অবস্থা পরিবর্তন করতে পারে।
চলতি মাসে চীন ছাড়াও বৈশ্বিকভাবে বেশ কয়েকটি প্রার্থী ভ্যাকসিনের মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে।
চীনের আরেকটি কোম্পানি সাইনোভ্যাক তাদের প্রার্থী ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শুরু করেছে মহামারিতে বিপর্যস্ত দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে। ক্যানসাইনো বায়োলজিক্স নামের আরেকটি চীনা কোম্পানি কানাডায় একই স্তরের ক্ল্রিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছে।