মহাখালীতে যানজট নিরসনে ডিএমপি’র কড়াকড়ি
রাজধানীর মহাখালী টার্মিনাল এলাকায় যানজট যেন স্বাভাবিক ঘটনা। রাস্তার ওপর অবৈধ পার্কিং, অপ্রয়োজনীয় ইউটার্ন, যত্রতত্র বাস থামানো এখানকার নিত্যদিনের দৃশ্য। তবে এই এলাকার যানজট নিরসনে সম্প্রতি বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। ইতোমধ্যে তা বাস্তবায়নে কাজ শুরু হয়েছে। এতে পাল্টে যেতে শুরু করেছে এই এলাকার পুরো চিত্র।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, গৃহীত সিদ্ধান্ত পুরোপুরি কার্যকর হতে সপ্তাহখানেক সময় লাগবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মহাখালী এলাকায় যানজটের কারণ ও নিরসনে করণীয় ঠিক করতে পরিবহন ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে ট্রাফিক-গুলশান বিভাগ। বৈঠকে টার্মিনালে অতিরিক্ত বাস, রাস্তায় অবৈধ পার্কিং, টার্মিনালের ইন ও আউট গেটে সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবসহ বেশকিছু সমস্যা চিহ্নিত করা হয়।
সভায় এসব সমস্যা সমাধানে বেশকিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যারমধ্যে রয়েছে— যত্রতত্র পার্কিং ও যাত্রী ওঠানো-নামানো বন্ধ করা; দূরপাল্লার বাসগুলোকে নির্দিষ্ট স্টপেজ ছাড়া দাঁড়ানোর অনুমতি না দেওয়া; এছাড়া, ঢাকার ভেতরে চলাচলকারী লোকাল বাসগুলোকে 'বাস সে' ছাড়া যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলার অনুমতি না দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়গুলো মনিটরিংয়ে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের স্বেচ্ছাসেবকরাও রাস্তায় কাজ করবে। টার্মিনালের পেছনে থাকা খাস জমি অধিগ্রহণ করে রাস্তায় পার্কিং বন্ধ করা হবে।
মহাখালী ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার আরিফুর রহমান রনি জানান, "প্রাথমিকভাবে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানো-নামানো বন্ধে চালকদের সর্তক কর হচ্ছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সতর্ককতা না মানায় মামলা দেওয়া হচ্ছে। শ্রমিক ফেডারেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা টার্মিনালের সামনে থাকা থামানো বাসগুলো অন্যত্র সরে যেতে সহায়তা করছেন।"
তিনি বলেন, "আগামী সপ্তাহ থেকে কোনো সতর্কতা থাকবে না। নির্দিষ্ট স্টপেজে বাসের যাত্রী গণনা করা হবে। পরের স্টপেজে যাত্রী ওঠানোর আগে সংখ্যা বেশি হলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
"আন্তঃজেলার বাসগুলো টার্মিনালের মধ্যে থাকবে। গেটগুলো লক করা থাকবে। পরবর্তী স্টপেজের আগে কোথাও থেকে যাত্রী তোলা যাবে না। টার্মিনালের মধ্যে গাড়ি পার্কিং করতে হবে," যোগ করেন আরিফুর রহমান।
তবে এ সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বলেন, টার্মিনালের পেছনে অনেকখানি জায়গা অব্যবহৃত অবস্থায় আছে। সেটি বাস ট্রার্মিনালের সাথে একীভূত করা হলে রাস্তায় পার্কিং বন্ধ করা যাবে।
"ট্রাফিক পুলিশ, পরিবহন মালিক-শ্রমিক পক্ষ এবং সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে আলোচনা চলছে। আশা করি, দ্রুতই এর সমাধান হবে," যোগ করেন তিনি।