মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিকে কনডেম সেলে রাখা অবৈধ: হাইকোর্ট
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কারাগারের কনডেম সেলে (অন্ধ প্রকোষ্ঠে) বন্দি রাখা অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া চূড়ান্ত আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া বিভিন্ন মামলায় মৃতুদণ্ডাদেশ পাওয়া কারাবন্দিদের সাধারণ বন্দিদের মতো কারাগারে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে একইসঙ্গে জেলকোডের ৯৮০ বিধিকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছেন আদালত।
সোমবার (১৩ মে) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির রিটের পক্ষে শুনানি করেন। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার; সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নাসিম ইসলাম রাজু।
এর আগে ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা কেন বেআইনি হবে না এবং জেলকোডের ৯৮০ বিধি কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়।
বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান রাখেন।
গত বছরের ৫ এপ্রিল মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা কেন বেআইনি হবে না এবং কেন জেলকোডের ৯৮০ বিধি অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে কনডেম সেলে থাকা বন্দিদের বিষয়ে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে দণ্ডিত আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিট করা হয়। চট্টগ্রাম কারাগারে কনডেম সেলে থাকা জিল্লুর রহমানসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির এ রিট দায়ের করেন।
রিট আবেদনকারী তিন আসামি হলেন: চট্টগ্রাম কারাগারের কনডেম সেলে থাকা সাতকানিয়ার জিল্লুর রহমান, সিলেট কারাগারে থাকা সুনামগঞ্জের আব্দুর বশির ও কুমিল্লা কারাগারে থাকা খাগড়াছড়ির শাহ আলম।