অক্সফোর্ড ইকোনমিক্স গ্লোবাল সিটি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ৫০০-তে নেই বাংলাদেশের কোনো শহর
অক্সফোর্ড ইকোনমিক্স গ্লোবাল সিটিজ ইনডেক্স ২০২৪-এর শীর্ষ ৫০০-তেও জায়গা করে নিতে পারেনি বাংলাদেশের কোনো শহর।
অর্থনৈতিক উৎপাদন থেকে শুরু করে জীবনযাত্রার মান পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় মূল্যায়ন করে বিশ্বের ১,০০০টি বড় শহরকে এই তালিকায় জায়গা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল (২২ মে) প্রকাশিত এই তালিকায় বাংলাদেশের ৮টি শহরকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। অর্থনীতি, শিক্ষা ও ব্যবসায়িক পরিবেশের কারণে দেশের ভেতরের শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা রয়েছে ১ নম্বরে, মূল তালিকায় অবশ্য ঢাকার অবস্থান ৫৪০তম।
তালিকায় বাংলাদেশের বাকি শহরগুলোর অবস্থান রয়েছে শেষ ২০০ শহরের মধ্যে। ঢাকার পরে রয়েছে চট্টগ্রাম, মূল তালিকায় যার অবস্থান ৮২৩তম। এরপরে রয়েছে সিলেট (৮৩৪তম), এরপরে ময়মনসিংহ (৮৬৮তম), তারপরে খুলনা (৮৭২তম), পরের স্থানে রাজশাহী (৮৭৫তম), এরপরে কুমিল্লা (৯৩৯তম) এবং সবশেষ মূল তালিকায় ৯৫৩তম স্থানে রয়েছে বগুড়া।
ইনডেক্সটিতে বিশ্বের ১,০০০টি শহরের মাধ্যমে ১৬৩টি দেশের মেট্রোপলিটন এলাকাগুলোকে উপস্থাপন করা হয়েছে।
৫ বিভাগে ২৭টি সূচকের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে শহরগুলোর স্কোর; এই স্কোরের ওপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে র্যাঙ্কিং। বিভাগ ৫টি হলো— অর্থনীতি, মানব মূলধন (হিউম্যান ক্যাপিটাল), জীবনযাত্রার মান, পরিবেশ এবং শাসন।
'অর্থনীতি' বিভাগে শহরগুলোর অর্থনৈতিক আকার, গঠন এবং প্রবৃদ্ধি পরিমাপ করে— এমন সূচক বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এই বিভাগে বাংলাদেশের শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ঢাকা, মূল তালিকায় অর্থনীতি সূচকে ঢাকার অবস্থান ৩০৯তম। এরপরে রয়েছে চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ।
'হিউম্যান ক্যাপিটাল' বিভাগে জনসংখ্যাগত প্রবণতার পাশাপাশি শহরের শিক্ষা ও ব্যবসায়িক পরিবেশ বিবেচনায় নিয়ে স্কোর দেওয়া হয়েছে। এখানেও বাংলাদেশের শহরগুলোর মধ্যে প্রথমে রয়েছে ঢাকা, অবস্থান ১৭০তম। এরপরে আছে খুলনা ও রাজশাহী।
এদিকে, রাজশাহী শহর 'কোয়ালিটি অফ লাইফ' বা জীবনযাত্রার মানের দিক থেকে ৭৭০তম অবস্থানে রয়েছে; সিলেট রয়েছে ৭৮৮তমতে। অন্যদিকে, এই ক্যাটাগরিতে ঢাকার অবস্থান ৭৯৪তম।
'পরিবেশ' বিভাগে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ইস্যুতে শহরগুলোর প্রাকৃতিক পরিবেশ কেমন, তা যাচাই করে– এমন সব নির্দেশক বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এই বিভাগে দেশের শহরগুলোর মধ্যে এগিয়ে আছে সিলেট। মূল তালিকায় এই সূচকে সিলেটের অবস্থান ৭০৪তম এবং এরপরে থাকা চট্টগ্রামের অবস্থান ৭৪০তম। তবে এই বিভাগে দেশের শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার অবস্থান সবচেয়ে খারাপ, মূল তালিকায় ৮৯০তম স্থানে রয়েছে রাজধানী।
'শাসন' বিভাগে শহরকেন্দ্রিক উপাদানের চেয়ে জাতীয় পর্যায়ের শাসন ব্যবস্থাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বেশি। অর্থাৎ, এই বিভাগে একটি দেশের প্রতিটি শহরকে একই স্কোর দেওয়া হয়েছে। তাই মূল তালিকায় স্থান পাওয়া বাংলাদেশের ৮টি শহরই 'শাসন' বিভাগে ৮৮৭তম স্থানে রয়েছে।
২০২৩ সালে, বিশ্বব্যাপী জিডিপির ৬০ শতাংশ এবং বিশ্ব জনসংখ্যার ৩০ শতাংশেরও বেশি এই ১,০০০ বৃহত্তম শহরের দখলে ছিল।
তালিকায় শীর্ষ ৫ শহর হলো— নিউইয়র্ক (যুক্তরাষ্ট্র), লন্ডন (যুক্তরাজ্য), সান জোসে (যুক্তরাষ্ট্র), টোকিও (জাপান) এবং প্যারিস (ফ্রান্স)।
এদিকে তালিকায় থাকা দক্ষিণ এশিয়ার ১০ শহরের মধ্যে ৭টিই ভারতের। এরমধ্যে এই অঞ্চলে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে দিল্লি; মূল তালিকায় অবস্থান ৩৫০তম স্থানে। এর পরে রয়েছে— বেঙ্গালুরু (৪১১তম), মুম্বাই (৪২৭তম), কলম্বো (৪৪৯তম) এবং চেন্নাই (৪৭২তম)। এ অঞ্চলে ঢাকার অবস্থান দশম।
এছাড়া তালিকায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে থাকা বা শেষ ৫টি শহর হলো— সুলতানপুর (উত্তর প্রদেশ, ভারত), সোকোটো (নাইজেরিয়া), হারদোই (ভারত), জারিয়া (নাইজেরিয়া) এবং পোর্ট-অব-প্রিন্স (হাইতি)।