করোনাকালে ত্যাগের ঈদ
পবিত্র ঈদুল আজহা আজ, ১০ জিলহজ। বছরজুড়ে নানা প্রতিকূলতা স্বত্বেও বর্ষপরিক্রমার চিরায়ত নিয়মে মুসলিম জাহানে ফিরে এসেছে ত্যাগ তথা কোরবানির এ উৎসব।
কোরবানির এ ঈদে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ত্যাগের প্রতীক স্বরূপ পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। তবে ইসলাম ধর্মে কোরবানির পশু মুখ্য নয় বরং আল্লাহর কাছে তাকওয়াটাই প্রধান।
বিশ্ব মুসলিমদের ১০ জিলহজ পশু কোরবানি করে থাকেন। তবে ১১ ও ১২ জিলহজও কোরবানির বিধান রয়েছে। যদিও চলমান করোনাভাইরাস মহামারি ও বন্যার কারণে এবার অনেকটাই ম্লান হয়েছে ঈদ আনন্দ। মহামারির মধ্যে আবার বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপন্ন অনেক জনজীবনে আঁধার নেমে আসে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে এবার ঈদগাহ মাঠ বা উন্মুক্ত স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। ফলে রাজধানীসহ সারা দেশের মসজিদগুলোতেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে ঈদের নামাজ পড়তে হবে। নামাজ শেষে কারও সঙ্গে কোলাকুলি বা হাত মেলানো যাবে না।
ঈদুল আজহা ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র ইসমাইল (আ.)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত। ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করতে গিয়েছিলেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা। তিনি পুত্রকে আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
নিজের চোখ বেঁধে পুত্র ইসমাইলকে বেঁধে যখন জবাই সম্পন্ন করেন, তখন চোখ খুলে দেখেন ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়েছে, যা এসেছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে।
সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই ইব্রাহিম (আ.)-এর ওয়াজিব হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামি শরিয়তে। সেই মোতাবেক প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব।
কোরবানির মূল কথা হল ত্যাগ। সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি দিয়ে দরিদ্র প্রতিবেশীদের মধ্যে এর মাংস বিতরণ করা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব।