ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে তছনছ সুন্দরবনের পর্যটন স্পটগুলো
ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনের। ঝড়ের কবলে মারা পড়েছে হরিণসহ অন্যান্য প্রাণী। এছাড়া ঝড়ের তাণ্ডবে বনের পর্যটন স্পটগুলো বিধ্বস্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ মে) সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ কার্যালয় এবং কলাগাছিয়া পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, অফিস ঘাটে উঠানামা করার জেটি ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে।
পশ্চিম সুন্দরবনের কলাগাছিয়া পর্যটন কেন্দ্রের স্টেশন কর্মকর্তা সাদ আল জামি ঝড়ের সময়ের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন।
তিনি বলেন, 'জীবনটা চলে যায় এমন পরিস্থিতি ছিল। বন কার্যালয় ছিল পানির নিচে। প্রচণ্ড বেগে পানির ঢেউ আছড়ে পড়ছিল। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উঠানামা করার জেটিসহ নানা স্থাপনা। ৭-৮ ঘণ্টা ৮-১০ ফুট পানির নিচে ছিল সুন্দরবন।'
তিনি আরও বলেন, 'হরিণ ও শুকরসহ নানা প্রাণীর ক্ষতির আশঙ্কা করছি। এখনও বনের ভিতরে পানি থাকায় বণ্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছেনা। পানি নেমে গেলে প্রকৃত চিত্র উঠে আসবে।'
পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা ইকবাল হুসাইন চৌধুরী বলেন, 'রেঞ্জের আওতায় সব টহল ফাঁড়ি এবং চারটি স্টেশন কার্যালয়ের স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবমিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।'
ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির তালিকা প্রস্তুত করেছে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন।
সেখানে বলা হয়েছে, জেলায় ১১৯২টি ঘরবাড়ি আংশিক এবং ২৭৬টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া দুইশো' হেক্টর জমির মাছের ঘের এবং ৬০৪ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।
খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, বন বিভাগের টহল অফিসগুলোতে টিনের চালা, জানালা-দরজা, সোলার প্যানেল, ওয়্যারলেস সিস্টেম ও অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। পূর্ব বন বিভাগের কটকা অভয়ারণ্যের অফিস ঘাটের জেটি ও পুকুর বঙ্গোপসাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।'
তিনি বলেন, 'দুবলা, কটকা, কচিখালি, বগিসহ বিভিন্ন বন অফিসসহ ২৫টি টহল ফাঁড়ির রান্নাঘরসহ অবকাঠামোর টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে ঝড়। সুন্দরবনে মিঠাপানির উৎস ৮০টি পুকুর ৮-১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বনকর্মীদের পাশাপাশি প্রাণীরাও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে।'