‘বিশ্বের যেকোনো দলকে হারাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র’
'বিশ্বের যেকোনো দেশকে হারাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র'- বার্তাটা খুব পরিষ্কার অ্যারন জোন্সের। যুক্তরাষ্ট্রের এই ব্যাটসম্যানের মন্তব্য জানান দেয়, কোমড় বেধেই জলে নেমেছে তারা। ইতোমধ্যে অবশ্য নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আইসিসির সহযোগী দেশ হিসেবে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েই সুপার এইটে উঠে গেছে তারা। আইসিসির কোনো সহযোগী দেশই আগে কখনও এমন সফলতা পায়নি।
বিশ্বকাপ ও নিজেদের প্রথম ম্যাচে কানাডার দেওয়ার বিশাল লক্ষ্য পাড়ি দিয়ে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে জেতে যুক্তরাষ্ট্র। পরের ম্যাচে দারুণ লড়া দলটি সুপার ওভারে পাকিস্তানকে হারায়। শেষ পর্যন্ত হারলেও ভারতকেও কাঁপিয়ে দেয় বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটার নিয়ে দল গড়া যুক্তরাষ্ট্র। গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যায়, দুই জয় ও পরিত্যক্ত হওয়া ম্যাচ থেকে পাওয়া এক পয়েন্টসহ পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে সুপার এইটে ওঠে তারা। এতে আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সরাসরি খেলাও নিশ্চিত হয় তাদের।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেই সুপার এইটের টিকেট কাটতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু বৃষ্টির হানায় পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টার পর ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। ম্যাচটি না হলেও তাতে ক্ষতি হয়নি যুক্তরাষ্ট্রের। বরং, কোনো ঝুঁকি ছাড়াই সুপার এইটে ওঠে তারা। প্রথম বিশ্বকাপে অংশ নিয়েই ইতিহাস লিখে চলা দলটির লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। এরপরও ম্যাচ না খেলতে পারার আফসোস আছে জোন্সের।
কানাডার বিপক্ষে খুনে ব্যাটিংয়ের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে মহাকার্যকর ইনিংস খেলা জোন্স ম্যাচের পর বলেন, 'একজন ক্রিকেটার হিসেবে আমি বা দলের অন্যরা আজ মাঠে আসার পর মনে হয় না, কেউ ক্রিকেট না খেলে বাড়ি ফেরা পছন্দ করবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি খেলতে চাই। কিন্তু বৃষ্টি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। সুপার এইটে যেতে পারায় আমরা কৃতজ্ঞ।'
ম্যাচ খেলতে না পারার আফসোস থাকলেও দলের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত জোন্স। সুপার এইটে ওঠা অনেক বড় ব্যাপার জানিয়ে তিনি বলে, 'আমরা ক্রিকেট খেলার কথা চিন্তা করেই হোটেল থেকে বের হয়েছিলাম। আমরা ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম। অবশ্যই আমরা উদযাপন করছি। সবাই এখন খুশি। সুপার এইটে কোয়ালিফাই করা অবশ্যই অনেক বড় বিষয়। তাই এখন সবাই আনন্দিত।'
সুপার এইটে ইতোমধ্যে দুই প্রতিপক্ষ ঠিক হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লড়তে হবে তাদের। স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের মধ্যে যেকোনো একটি দল হবে স্বাগতিকদের আরেক প্রতিপক্ষ। তিন প্রতিপক্ষই শক্তিশালী হবে, তবে এসব নিয়ে একেবারেই ভাবছেন না জোন্স। তার মতে, নির্দিষ্ট দিনে টিকভাবে খেলতে পারলে যেকোনো দলকে হারাতে পারা। অবশ্য এটা তার নতুন ভাবনা নয়, ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জেতার পরই এমন বার্তা দেন তিনি।
জোন্সের ভাষায়, 'এ বছর আমি এর আগেও এই কথা বলেছি। সত্যি বলতে, আপনাদের অনেকে (সংবাদমাধ্যম) যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটকে তেমন পাত্তা দিতে চায় না। তাই বিশ্ব জানে না, আমাদের এখানে কেমন প্রতিভা আছে এবং ক্রিকেটাররা কতো ভালো। এটা হয়তো আমাদের জন্য কিছুটা সুবিধার হবে। তবে যেকোনো নির্দিষ্ট দিনে আমরা যখন যথাযথ ক্রিকেট খেলব, নিশ্চিতভাবেই বিশ্বের যেকোনো দলকে হারাতে পারব।'
তাদের এবারের সাফল্য যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করবে বলে আশা জোন্সের। তরুণ প্রজন্মের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার। গত কয়েক বছর বিশ্বকাপ খেলা দল, আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশগুলোর বিপক্ষে খেলার ব্যাপারে আলোচনা করেছি। আমরা এখন সেটাই করছি। সুপার এইটে কোয়ালিফাই করা অবশ্যই অনেক ভালো। আমরা সম্ভবত ২০২৬ বিশ্বকাপেও জায়গা করে নেব। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় ব্যাপার। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সকল সমর্থক ও তরুণ প্রজন্মের জন্য এটা অনেক বড় ব্যাপার। আমরা তাদের স্বাগত জানাই।'