ভারতের স্নাতকোত্তর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার রুটিন ৪ বার পরিবর্তনের পর স্থগিত
ভারতে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা (এনইইটি-পিজি) নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা ও বিতর্ক। কমপক্ষে চারবার রুটিন পাল্টানোর পর পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে।
এক্ষেত্রে কখনও পরীক্ষার সময়সূচি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার কখনও এগিয়ে আনা হয়েছে পরীক্ষার দিনক্ষণ।
প্রথমে বলা হয়েছিল যে, গত ৩ মার্চ এনইইটি-পিজি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তারপর সেটা পিছিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৭ জুলাই। সেটাকে ফের এগিয়ে আনা হয়েছিল ২৩ জুন। এক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত সেই ২৩ জুনেও হল না এনইইটি-পিজি পরীক্ষা।
এক্ষেত্রে বলা হয়েছে যে, 'সতর্কতামূলক ব্যবস্থা' হিসেবে পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। কবে ফের পরীক্ষা নেওয়া হবে, তা নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
গত নভেম্বরে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে 'ন্যাশনাল বোর্ড এফ এক্সামিনেশনস ইন মেডিক্যাল সায়েন্সস'-র পক্ষ থেকে পরীক্ষার সম্ভাব্য দিনক্ষণ জানানো হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল যে, ৩ মার্চ স্নাতকোত্তরের মেডিকেলে ভর্তির পরীক্ষা হতে পারে। তবে লোকসভা নির্বাচনের আবহে সেই পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
স্নাতক পর্যায়েও অনিয়মের অভিযোগ
এদিকে ভারতের স্নাতক পর্যায়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় অস্বাভাবিকভাবে বেশি নম্বর পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর এতেই অন্যান্য পরীক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন; শুরু হয়েছে প্রতিবাদ।
এক্ষেত্রে গত ৪ জুন ফলাফল প্রকাশের পর প্রশ্নপত্রে ভুল থেকে শুরু করে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। তাই বহু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা পুনরায় পরীক্ষার দাবি করেছেন। এজন্য আদালতে কয়েক ডজন পিটিশনও দাখিল করা হয়েছে।
যদিও পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে দেশটির ফেডারেল শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান স্বীকার করে জানান, কোনো কোনো পরীক্ষা কেন্দ্রের 'কিছু অনিয়ম' সামনে এসেছে। এক্ষেত্রে মন্ত্রী বলেন, "অনিয়ম পাওয়া গেলে এনটিএ কর্মকর্তাসহ কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।"
এদিকে পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার পরপরই বিহার পুলিশ প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে। এক্ষেত্রে গত ১০ মে চার শিক্ষার্থীসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ১৫ জুন পুলিশ মামলায় জড়িত সন্দেহে আরও নয়জন পরীক্ষার্থীকে নোটিশ পাঠায়।
এক্ষেত্রে পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তা মানবজিৎ সিং ধিলোন টাইমস অফ ইন্ডিয়া পত্রিকাকে জানান, ১৩ জন অভিযুক্ত কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে পরীক্ষার এক দিন আগে একটি 'সেফ হাউসে' ৩০ জন পরীক্ষার্থীর কাছে প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
আর পরীক্ষাটি নিয়ে চলমান অভিযোগকে সামনে এনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের ওপর লাখ লাখ শিক্ষার্থীর 'স্বপ্নের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা' করার অভিযোগ এনেছে বিরোধীরা।
কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খড়গে পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং তার সরকারের ওপর কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ করেন। একইসাথে অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে তিনি দলের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের সম্পৃক্ততায় তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান