হামাসের সামরিক শাখার প্রধানকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলের হামলা, নিহত ৭১
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফকে লক্ষ্যবস্তু করার দাবি করে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ ঘটনায় অন্তত ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ইসরায়েল নির্ধারিত 'নিরাপদ' এলাকা মুওয়াসির ভেতরে হামলাটি চালানো হয়, যা উত্তর রাফাহ থেকে খান ইউনিস পর্যন্ত বিস্তৃত। হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি সেখানে তাঁবু করে আশ্রয় নিয়েছে।
নিহতদের মধ্যে মোহাম্মদ দাইফ ছিলেন কি না তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দাবি, তিনি ও হামাসের দ্বিতীয় কমান্ডার রাফা সালামাকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়।
হামলায় আরও অন্তত ২৮৯ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হতাহতদের বেশ কয়েকজনকে পাশের নাসের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
অনেকের মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলার মূল কারিগর ছিলেন হামাসের এই কমান্ডার। ওই ঘটনায় এক হাজার ২০০ বেসামরিক ইসরায়েলি নিহত হন, যারপর থেকে গত নয় মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে আসছে ইসরায়েল।
মোহাম্মদ দাইফ বেশ কয়েক বছর ধরে ইসরায়েলের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকার শীর্ষে রয়েছেন। অতীতে ইসরায়েলের একাধিক হত্যাচেষ্টা থেকে রক্ষা পেয়েছেন তিনি।
তাকে লক্ষ্য করে এ হামলা চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। অবশ্য ইসরায়েলিদের জন্যে এটি গত নয় মাসে একটি বড় বিজয় হিসেবে দেখা হবে।
তবে ইসরায়েলের দাবি প্রত্যাখ্যান করে হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দখলদারদের (ইসরায়েল) ফিলিস্তিনি নেতাদের লক্ষ্যবস্তু করার দাবি এটিই প্রথম নয়, কিন্তু প্রতিবারই তাদের এসব দাবি মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়।
হামাস মুখপাত্র জিহাদ ত্বহা বলেছেন, দাইফ হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিলেন বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন এবং (গাজায় সংঘটিত) অপরাধ ও গণহত্যার ন্যায্যতা ও তা ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এগুলো রটানো হচ্ছে।
মোহাম্মদ দাইফ দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে আত্মগোপনে রয়েছেন। একাধিক গুপ্ত হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে যাওয়ার পর তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত বলে ধারণা করা হয়। ইসরায়েলের প্রকাশিত একটি পরিচয়পত্রে তার ৩০ বছর বয়সি ছবিই এখন পর্যন্ত দেখা গেছে। এমনকি গাজায়ও খুব বেশি মানুষ তাকে দেখেননি।