জাবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় নীরব ভূমিকা পালনের অভিযোগ প্রক্টরের বিরুদ্ধে
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে কথিত ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নীরব ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিল শুরু হলে সন্ধ্যা ৭টা ১৪ মিনিটে বঙ্গবন্ধু হল সংলগ্ন বটতলা এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা হয়।
কিন্তু এটি পূর্বঘোষিত কর্মসূচি জানা সত্ত্বেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবীর। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, ঘটনার আধঘণ্টা পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবীর ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখানে ১০ মিনিট অবস্থানের পর, এক পর্যায়ে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আওলাদ হোসেন আহত হলে তাকে নিয়ে প্রক্টর আলমগীর কবীর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে যান।
এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, "আমার শিক্ষক আহত হয়েছেন। আমি মেডিকেলে যাবো।"
এরপর থেকে তাকে আর ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
সংঘর্ষের দীর্ঘক্ষণ পরে প্রক্টর আসার সাথে সাথে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তীব্র তোপের মুখে পড়েন তিনি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আলিফ মাহমুদ বলেন, "আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের বেধড়ক মারধর করে ছাত্রলীগ। আমাদের কর্মসূচি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা সত্ত্বেও প্রক্টরিয়াল টিম বা নিরাপত্তা শাখা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। প্রক্টরকে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।"
এদিকে এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবীর বলেন, "প্রোগ্রামটি নির্ধারিত সময়ের ৩০ মিনিট আগে শুরু হয়েছিল। আমরা এদিকে আসছিলাম, কিন্তু গাড়ি আটকা পড়ায় গাড়ি থেকে নেমে যতটুকু সময় লেগেছে এরমধ্যে এসে দেখি এসব ঘটনা ঘটছে। আমরা পুরো বিষয়টা অবজার্ভ করছি।"
এদিকে, আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা রাত সাড়ে ৮টায় শহিদ মিনার চত্বরে জড়ো হতে থাকেন। সেখান থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। রাত সাড়ে ১০ টায় উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে আসলে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে, আলোচনা অসম্পূর্ণ রেখে উপাচার্য বাসভবনের ভিতরে চলে যান। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা 'ভুয়া, ভুয়া' স্লোগান দিতে থাকেন।
উপস্থিত সাংবাদিকরা উপাচার্যের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। উপাচার্য বলেন, "আমি এখানে সাংবাদিক সম্মেলন ডাকিনি। সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবো না।"