১৬ বছরেও শেষ হয়নি ২.৫ কিমি রাস্তা নির্মাণ,ব্যয় বেড়েছে ১৪৩ কোটি
ভৃমি অধিগ্রহন ও প্রকল্পের নাম পরিবর্তনে সময় ক্ষেপনের পাশাপাশি নানা জটিলতায় ১৬ বছরেও শেষ হয় নি বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মোহাম্মাদ আলী হাসপাতাল সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ। বরং প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় বেড়েছে ১৪৩ কোটি টাকারও বেশি।
২০০৪ সালে বগুড়া শহরের সাতমাথা থেকে সাত কিলোমিটার দূরে প্রথম বাইপাস সড়কের সিলিমপুর এলাকায় স্থাপন করা হয় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।
সাতমাথার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের কোনও রাস্তা না থাকায় বর্তমানে স্টেশন সড়কের তিনমাথা ও শেরপুর সড়কের বনানী হয়ে সাত কিলোমিটার পথ ঘুরে হাসপাতালে যাতায়াত করতে হয়। এ দুই সড়কে অধিকাংশ সময় যানজট লেগে থাকে। এতে মুমূর্ষু রোগী এবং রোগীর সঙ্গে আসা স্বজনদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
দুর্ভোগ লাঘবে ২০০৪ সালে শহরের রেলস্টেশনের সামনে থেকে সেউজগাড়ি ও মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল হয়ে সরাসরি শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত একটি সংযোগ সড়ক নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ করে সওজ।
সাড়ে চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৬০ ফুট প্রস্থ রেখে নকশা অনুমোদনের পর জমি অধিগ্রহণ, মাটি কাটা এবং কার্পেটিংসহ ওই সময় সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।
২০০৫ সালের ২ মে পরিকল্পনা কমিশন থেকে প্রকল্পটি অনুমোদনের পর দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া শেষ হয়। ১ দশমিক ১২ হেক্টর জমি অধিগ্রহণও করা হয়।
পরে রাস্তার দৈর্ঘ্য আড়াই কিলোমিটারে কমিয়ে আনা হয়।
আড়াই কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের এই প্রকল্পের মেয়াদ ৩ বছর ধরা হলেও ১২ বছর কাজ হয় মাত্র ৮শ মিটার।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, ১০ মিটার প্রস্থ ও প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ কাজ ২০০৬ সালের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় নানা জটিলতায়। প্রায় ৪ বছর আগে ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর বগুড়ায় এক জনসভায় এ প্রকল্পের কাজ শেষ করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিলেও বাকি ১৮শ ৫০ মিটার সড়ক নির্মাণে এখনও কাজই শুরু হয়নি।
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের চিকিৎসরা বলছেন, এ সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় দূর্ঘটনায় আহতদের পাশাপাশি গুরুতর অসুস্থদের সময়মত চিকিৎসা দেয়া যাচ্ছে না।
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা: মো: আব্দুল ওয়াদুদ জানান, শহর থেকে হাসপাতালটি দূরে হওয়ায় অনেক সময়ই জরুরী প্রয়োজনেও চিকিৎসকরা তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আসতে পারেন না। এ সড়কটির নির্মান শেষ হলে শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথা থেকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সময় এবং টাকা দুইই বাঁচবে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আশরাফুজ্জামান জানান, “সড়ক নির্মানের জন্য প্রয়োজনীয় ভুমি অধিগ্রহনে ৫৮ কোটি টাকার বরাদ্দ পাওয়া গেছে, কাজও শুরু হবে খুব শিঘ্রই। আমরা আশা করছি ২০২০ সালের আগেই ১২শ ৫০ মিটার সড়ক নির্মানের কাজ শেষ হবে”।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের ধারণা এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ওই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার যানবাহন খুব সহজে যাতায়াত করতে পারবে।