সবুজ দ্বীপে সংক্রমণ, কোভিডের কবলে আন্দামানের লুপ্তপ্রায় আদিবাসী
করোনাভাইরাস সংক্রমণের শিকার আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের আদিবাসী গোষ্ঠীগুলো। এর মধ্যেই কোভিড-১৯ পজিটিভ ধরা পড়েছেন গ্রেট আন্দামানিজ জনজাতির পাঁচ সদস্য।
গত বৃহস্পতিবার এই খবর জানিয়ে জরুরি প্রশাসনিক পদক্ষেপের আর্জি জানিয়েছে লন্ডনের বেসরকারি সংস্থা সার্ভাইভ্যাল ইন্টারন্যাশনাল। বিশেষ করে, জারোয়া জনজাতির সঙ্গে কর্মরত পাঁচ উন্নয়নকর্মীর মধ্যে সংক্রমণ দেখা দেওয়ায়, এবার চিন্তা বাড়ছে বিচ্ছিন্ন সেন্টিনেলিজ-সহ দ্বীপপুঞ্জের অন্যান্য আদিবাসী জাতিগুলিকে নিয়েও।
সার্ভাইভ্যাল ইন্টারন্যাশনাল-এর দাবি, ওই সমস্ত জনজাতি অধ্যুষিত দ্বীপে চোরা-শিকারিদের আনাগোনার সূত্রেই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়াতে শুরু করেছে। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই জারোয়া জনগোষ্ঠীর এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আট মৎস্যজীবীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
গবেষক সোফি গ্রিগ জানিয়েছেন, 'আরও সংস্থার বেশি সংখ্যক গ্রেট আন্দামানিজদের মধ্যে সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়, সে বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রশাসনকে। নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপ সংলগ্ন সমুদ্রেও টহলদারি বাড়াতে হবে। সরকারি অনুমোদন ছাড়া আন্দামানের আদিবাসী জনজাতিগুলির কাছে যাতে কোনও, বহিরাগত না পৌঁছতে পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার।
সাম্প্রতিক বিবৃতিতে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, গ্রেট আন্দামানিজ জনজাতির বর্তমানে সদস্য সংখ্যা মাত্র ৫০। ১৮৫০ দশকে ব্রিটিশ শাসনের অধীনে আসার সময় এই সংখ্যা ছিল ৫,০০০ এর বেশি। সভ্যতার স্পর্শে তাদের মধ্যে ব্যাপক হারে টিউবারকিউলোসিস ও মদ্যপানের অভ্যাস তৈরি হলে, দ্রুত কমতে থাকে গ্রেট আন্দামানিজদের জনসংখ্যা। এবার কোভিডের গ্রাসে তাদের বিলুপ্তি ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গবেষকরা।
একই সঙ্গে চরম সংকটজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপের বিচ্ছিন্ন বাসিন্দারাও। ওই জনজাতির সঙ্গে সভ্য দুনিয়ার যোগ না থাকলেও চোরাশিকারি ও অবৈধ অনুপ্রবেশের জেরে- দ্বীপভূমিতে অচিরে কোভিড ছড়াতে পারে, বলেও বিবৃতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।