৫ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বিপৎসীমার ওপরে ৮ নদীর পানি
দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ও ভারতে বাঁধ খুলে দেওয়ায় ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এর মধ্যেই কুশিয়ারা, মনু, ধলাই, খোয়াই, মুহুরী, ফেনী, গোমতী ও হালদা নদীর পানি বিপৎসীমা ছাড়িয়ে গেছে।
হবিগঞ্জসহ কিছু জায়গার পানির স্তর আগের ৫০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) জানিয়েছে। এটি বলছে, ১১৬টি ওয়াটার লেভেল স্টেশনের মধ্যে ১০টি ঝুঁকিতে রয়েছে।
এফএফডব্লিউসির নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'বর্তমানে দেশের পাঁচটি জেলা আকস্মিক বন্যার সম্মুখীন। এসব এলাকার নদ-নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টা বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকবে। তিন দিন পর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।'
তিনি বলেন, 'মৌসুমি নিম্নচাপের কারণে গত তিন দিনে দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় বৃষ্টিপাত আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ফলে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এবার মৌসুমী নিম্নচাপটি বাংলাদেশের মধ্যভাগে কেন্দ্রীভূত রয়েছে। যদিও এটি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছে, তবে এই সময়টায় সাধারণত ভারতের বাঁধগুলো খুলে দেওয়া হয়। ফলে বন্যার পানিও বেড়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, 'হবিগঞ্জের খোয়াই নদীর পানির উচ্চতা ৫০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এই নদীর বিপৎসীমা ৯.০৫ মিটার। কিন্তু সকালের দিকে পানির প্রবাহের স্তর ১১ মিটার ছাড়িয়ে যায়। এটি এখনও বাড়ছেই। একইভাবে চট্টগ্রামে মুহুরী নদীর ভারতের অংশে পানির প্রবাহ ৪০ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।'
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং এ করণে তৎসংলগ্ন নিচু অঞ্চলে স্বল্পস্থায়ী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে এবং তৎসংলগ্ন উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফলে সার্বিকভাবে মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও গোমতী নদীর পানির স্তর অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
জানা গেছে, আজ সকাল ৯টায় বাল্লাহ স্টেশনে খোয়াই নদীর পানি বিপৎসীমার ২৩.১৭ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় ফেনীর পরশুরামে ৩০৪ মিলিমিটার, মৌলভীবাজারের মনু রেলওয়ে ব্রিজে ২৩৮ মিলিমিটার, কুমিল্লায় ২১০ মিলিমিটার ও সিলেটের জাফলংয়ে ১৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।