বৃষ্টি নেই, তবুও গোমতীর পানি ৫০ সেমি. বেড়েছে!
কুমিল্লার গোমতীপাড়ের বাসিন্দাদের নির্ঘুম রাত কাটছে। তাদের আতঙ্ক, কখন নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে।
অন্যদিকে, পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটছে দক্ষিণ কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার ১০ রাখের বেশি মানুষের।
বুধবার রাত থেকে বাড়ছিল কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি। জেলার আদর্শ সদর, বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার, মুরাদনগর ও দাউদকান্দি উপজেলার গোমতীর তীরবর্তী মানুষজন ঘুমহীন রাত কাটিয়েছে। বৃহস্পতিবারও তাদের উৎকন্ঠা নিয়ে দিনটি পার হয়। এখন আতঙ্ক রাত নিয়ে। কখন বাঁধ ভেঙে যায়।
এদিকে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল ৭টায় গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২২০মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। কিন্তু এরপর সারাদিন আর কোনো বৃষ্টি না হলেও রাত ৮টায় প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ১২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এসময়ে বৃষ্টি না হলেও পানি বেড়েছে ৫০ সেন্টিমিটার।
বৃহস্পতিবার বিকালে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার জালুয়াপাড়া, টিক্কারচর, চাঁনপুর, বানাশুয়া, বুড়িচং উপজেলার কামারখাড়া, কালখারপড়া, শিমাইলখাড়া, ভান্তি, মিথিলাপুর, গোবিন্দপুর এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, পানি গোমতীর তীর ছুঁই ছুঁই করছে।
গোমতীর তীরবর্তী দুইপাড়ের মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বেড়িবাঁধে অবস্থান করছেন।
বুড়িচং উপজেলার খামারখাড়া ব্রিজের পশ্চিম পাশে সেচের জন্য তৈরি করা নালা দিয়ে গোমতী নদী থেকে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। এ সময় শতাধিক স্থানীয় মানুষজনের সাথে অর্ধশত স্বেচ্ছাসেবী পানি নির্গতের জায়গাটিকে বাঁধ দিয়ে রাখার চেষ্টা চালায়।
অপরদিকে, গোমতীর পাড়ে বাঁধ মেরামত,খাবার বিতরণ ও উদ্ধার কাজে জেলা প্রশাসন, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস, বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠনের তৎপরতা দেখা গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো), কুমিল্লার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল লতিফ বলেন, 'গোমতীর পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ২০ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যে কোনো সময় পাড় ছাপিয়ে প্লাবিত হতে পারে গোমতী পাড়ের জনপদ।'
এদিকে ডাকাতিয়া ও ছোট ফেনী নদীর পানি বাড়ায় এবং বৃষ্টির প্রভাবে কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট, লাকসাম ও মনোহরগঞ্জে ১০ লাখের বেশি মানুষ পানিবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। দুই তৃতীয়াংশ বাড়ি-ঘর ডুবে গেছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছায়নি।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু.মুশফিকুর রহমান বলেন, 'বন্যার্তদের জন্য শুকনো খাবার ও চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি উদ্ধার তৎপরতার জন্য নৌবাহিনীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।'