ঋণের ভারে 'জর্জরিত' যুক্তরাষ্ট্র; এখন দৈনিক সুদই পরিশোধ করতে হচ্ছে ৩০০ কোটি ডলার
যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ ৩৫ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে এবং এই ঋণ বাবদ দৈনিক সুদের খরচ এখন প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার। অ্যাপোলো গ্লোবাল ম্যানেজমেন্টের প্রধান অর্থনীতিবিদ টরস্টেন স্লোক জানিয়েছেন, শুধু সাধারণ কার্যদিবসেই নয়, সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতেও এখন দেনা পরিশোধ করতে হচ্ছে।
২০২০ সালের পর থেকে এই সুদের পরিশোধের পরিমাণ দ্বিগুণ বেড়েছে। তখন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ফেডারেল রিজার্ভ) মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুদের হার বাড়িয়েছিল, যার ফলে ঋণ পরিশোধ আরও ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে। তবে ফেডারেল রিজার্ভ যদি এই মাসের শেষে সুদের হার কমানো শুরু করে, তাহলে এই প্রবণতা বিপরীত হতে পারে এবং ঋণ পরিসেবার খরচ কমতে পারে।
স্লোক বলেছেন, "যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার ১ শতাংশ কমায়, তাহলে প্রতিদিনের সুদের খরচ ৩ বিলিয়ন থেকে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসবে।"
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই মাসের শেষে তাদের অর্থবছর শেষ করতে যাচ্ছে এবং বছরের শুরু থেকেই সুদ পরিশোধের খরচ ১ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। যদিও সুদের হার কমানো কিছুটা স্বস্তি দেবে, তবে পরবর্তী প্রেসিডেন্টের সময় বাজেট ঘাটতি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ঋণের বোঝা আরও বাড়িয়ে তুলবে।
পেন ওয়ার্টন বাজেট মডেলের একটি সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প বা কমলা হ্যারিস, যে-ই প্রেসিডেন্ট হোন না কেন, বাজেট ঘাটতি বাড়বে। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে ঘাটতি আরও বেশি বাড়তে পারে। ট্রাম্পের পরিকল্পনার অধীনে, পরবর্তী ১০ বছরে প্রাথমিক বাজেট ঘাটতি ৫ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়বে, যেখানে কমলা হ্যারিসের পরিকল্পনায় এই ঘাটতি ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়বে।
জেপিমরগান বিশ্লেষকরা বলেছেন যে, নির্বাচন ফলাফল যাই হোক না কেন, বর্তমান অর্থনৈতিক নীতি অস্থিতিশীল এবং ঋণের বোঝা বাড়িয়ে দিচ্ছে, যা ব্যক্তিগত বিনিয়োগকে উৎসাহিত করছে। একইসঙ্গে, বেবি বুমারদের (১৯৪৬ থেকে ১৯৬৪ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া প্রজন্ম) ব্যাপক অবসরের কারণে সঞ্চয়ের হার কমছে এবং মূলধনের জোগান হ্রাস পাচ্ছে।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন