কিউরিও: ঢাকার জোরো, লুফি, গোকুদের রাজ্য
জোরো, লুফি, গোকু, নারুতো এখনকার শিশু-কিশোরদের অনেক চেনা, একসময় যেমন ছিল চাচা চৌধুরী, বিল্টু, বাটুল বা টিনটিন।
আরমান আহমেদেরও শুরুটাও হয়েছিল টিনটিন, বাটুলকে দিয়েই। নব্বইয়ের দশকের শেষ দিক, আরমানের বয়স ছয় বা সাত। বাসায় ভিসিআরে টিনটিন, চাচা চৌধুরীর কার্টুন দেখত। বিটিভিতে দেখাত সামুরাই এক্স। কার্টুন, কমিক চরিত্রগুলোর সঙ্গে ভাব ভালোবাসার সেই শুরু।
আমেরিকান মার্ভেল কমিকের সুপারম্যান, ব্যাটম্যানের সঙ্গেও আরমানের পরিচয় ঘটে। কিন্তু মার্ভেলের চরিত্রগুলো তার আপন হয়নি সেভাবে।
কারণ কী?
আরমান বলছিলেন, 'আমেরিকান কমিকগুলোয় ধারাবাহিকতা নেই। একেক পর্বে তারা একেক গল্প বলে। তুলনায় জাপানি কমিকগুলো দীর্ঘ ও ধারাবাহিক।'
জাপানিদের ঐতিহ্যবাহী গল্প বলার রীতি কমিকগুলোতে বর্তমান। উদাহরণস্বরূপ গোকুর কথা বলা যায়। ড্রাগন বল কমিক বা মাঙ্গার প্রধান চরিত্র গোকু। যখন সে শিশু, তখন থেকে কমিকটি শুরু হয়, আর তা অব্যাহত থাকে গোকু যুবক হওয়া পর্যন্ত।
গোকু একটু ক্ষ্যাপাটে গোছের। সে মার্শাল আর্ট অনুশীলন করে এবং কিছু অতিমানবীয় ক্ষমতারও অধিকারী। যৌবনকালে গোকু পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী যোদ্ধায় পরিণত হয় এবং বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনের সহযোগিতা নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে লড়াই করে যায়।
গল্পের নানান বাঁক ও পর্ব থাকায় পাঠক গল্পের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে পড়ে এবং গোকুর সঙ্গে নিজেও লড়তে থাকে।
ওয়ান পিস নামের আরেকটি কমিকের কথাও উল্লেখ করেন আরমান। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৯৯ সালে। আজ ২০২৪ সাল, মানে দুই যুগ পরেও তা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়ে চলেছে।
২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত একষট্টিটি দেশে ৫১৬.৬ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে ওয়ান পিসের। এ থেকে বোঝা যায়, জাপানি কমিক বইয়ের জনপ্রিয়তা কতখানি এবং বাজারও কতটা বড়।
'বইয়ের সঙ্গে অ্যানিমে, চলচ্চিত্র, টিভি সিরিজ, ভিডিও গেমস যোগ করলে সে বাজার আরো কয়েক গুণে বড় হয়ে যায়,' বলেন আরমান।
গডজিলা গেছে জাপান থেকে
ড্রাগন বলের প্রথম কিস্তি প্রকাশিত হয় ১৯৮৪ সালের ডিসেম্বর মাসে। গোকুর সঙ্গে আরমানের সখ্যতা গড়ে ওঠে অবশ্য তারও দুই দশক পরে।
গোকুর স্রষ্টা আকিরা তোরিয়ামার দারুণ ভক্ত আরমান। ইচ্ছা ছিল তার সঙ্গে দেখা করার, কিন্তু গত বছর তিনি মারা যাওয়ায় সে স্বপ্ন পূরণ হওয়ার সুযোগ আর রইল না। তবে নিজেদের অ্যানিমে শপের একটি কর্নার তোরিয়ামাকে উৎসর্গ করেছেন আরমান ও তার বন্ধুরা।
জাপানি কমিক চরিত্রগুলোর চোখ বড় হয়, চুল হয় ঝাকালো, মুখ হয় চোখা। এগুলো আঁকা হয় সরু রেখায়, সাদা-কালো রঙে।
জাপানের শতাব্দী প্রাচীন উডকাট শিল্পশৈলী থেকে কমিক বা মাঙ্গা শিল্পীরা প্রেরণা পেয়ে থাকেন।
আরমান বলেন, 'জাপানিরা হলিউডে বেশ কিছু আইডিয়া জোগান দিয়েছে। একটি যেমন ট্রান্সফরমারস। বিরাটাকায় এই রোবটের ধারণা হলিউড পেয়েছে জাপানিদের কাছ থেকে।
তিনি জানান, হলিউডের আগের রোবটগুলো মানুষের চেয়ে বেশি বড় ছিল না, এলিয়েনদের আক্রমণ সামলাতে তাদের হিমশিম খেতে দেখা যেত। ট্রান্সফরমারেই প্রথম ১০ তলা সমান উঁচু রোবটের দেখা মিলেছিল, যা বিস্মিত করেছিল দর্শকদের।
'আরেকটি যেমন গডজিলা। জাপানিরা একে কাইজু বলে। প্রথম গডজিলা দেখা যায় ১৯৫৪ সালের একটি জাপানি চলচ্চিত্রে। পরে হলিউডে একে নিয়ে পাঁচটি চলচ্চিত্র হয়েছে,' বলেন আরমান।
২০২৩ সালের মাঝামাঝিতে আরমান তার দুই বন্ধুর সঙ্গে মিরপুর ১২ নম্বরে একটি অ্যানিমে স্টোর খোলেন। কিন্তু ১৫০ বর্গফুট জায়গায় তাদের মন ভরছিল না। কারণ তারা কেবল দোকান নয়, একটি এক্সপেরিয়েন্স জোন তৈরি করতে চাইছিলেন। তাই মাসকয় পরে পাশের রমজাননেসা ভবনে চলে আসেন ৩০০ বর্গফুট জায়গা নিয়ে।
এখন এটি দেশের অন্যতম বৃহৎ অ্যানিমে স্টোরে পরিণত হয়েছে।
হাতে আঁকা ছবিকে কম্পিউটারে চলমান করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় অ্যানিমে। উৎপত্তি জাপানে বলে অ্যানিমে বলতে সাধারণত জাপানি অ্যানিমেশন ফিল্মকেই বোঝায়।
কার্টুনিস্ট ও মাঙ্গা আর্টিস্ট ওসামা তেজুকার হাত ধরে গত শতকের ষাটের দশকে অ্যানিমে বিকাশ লাভ করে। পরের কয়েক দশকে সারা পৃথিবীতে অ্যানিমে শত কোটি ভক্ত জোগার করে ফেলে।
আরও হয় টিভি সিরিজ, চলচ্চিত্র, ভিডিও গেমস ইত্যাদি। শিশু, কিশোর, যুবক, এমনকি মধ্যবয়সিদের জন্যও অ্যানিমে বা মাঙ্গা তৈরি হয়।
স্টুডিও জিবলি, কিয়োটো অ্যানিমেশন, সানরাইজ, বোনস, উইট স্টুডিও — জাপানের নামকরা কয়েকটি অ্যানিমে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।
এগুলোর মধ্যে স্টুডিও জিবলি সবচেয়ে নামকরা। এর প্রতিষ্ঠাতা হায়াও মিয়াজাকি একজন নির্মাতাও বটে। জিবলির বিশ্বমাতানো অ্যানিমেগুলোর মধ্যে প্রিন্সেস মনোনোকে (১৯৯৭), স্পিরিটেড অ্যাওয়ে (২০০১), হাউলস মুভিং ক্যাসেল (২০০৪), দি বয় অ্যান্ড দি হেরন (২০২৩) অন্যতম।
দর্শকেরা অ্যানিমের চরিত্রগুলোর দারুণ ভক্ত। তারা যা পরে (জামাকাপড় থেকে আংটি পর্যন্ত), যা ব্যবহার করে (পানপাত্র থেকে পকেট ঘড়ি পর্যন্ত), যে অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করে (তলোয়ার, চাকু বা লাঠি) — সবকিছুই দর্শকের পছন্দ।
এর সবগুলোই তারা সংগ্রহে রাখতে চান। তাই মাঙ্গা, অ্যানিমে, চলচ্চিত্র আর গেমসের সঙ্গে সঙ্গে অ্যাক্সেসরিজের (অনুষঙ্গ) বাজারও বড়।
আর এ সব অনুষঙ্গ নিয়েই সেজে উঠেছে আরমানদের 'কিউরিও দ্য কিউরিয়াস শপ'।
তিন বন্ধুর কিউরিও
তিন বন্ধুর উদ্যোগ এ দোকানটি। অন্য দুজন হচ্ছেন নাম পাভেল আহমেদ ও আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল। আরমান ও পাভেলের বাসা শ্যাওড়াপাড়ায়। ২০১০ সালে তারা এইচএসসি পাশ করেন। তারপর ম্যানেজমেন্ট বিভাগে আরমান ভর্তি হন তিতুমীর কলেজে, পাভেল পড়তে যান ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়।
পড়াশোনার ফাঁকে তারা ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম রেড বাবলে অ্যাকাউন্ট খোলেন। অ্যানিমে ক্যারেক্টার ডিজাইন করে তারা হাতখরচ জোগাড় করতে থাকেন।
ওয়ান পিসের গিয়ার ফোরের ফর্মেশন বদল হওয়ার ঘোষণা শুনে তারা একটি নকশা জমা দেন এবং সেটি বেশ জনপ্রিয় হয়।
২০১৫ সালের দিকে তাদের অ্যাকাউন্টটি হঠাৎই স্থগিত হয়ে গেলে তারা আশাহত হন। কিন্তু ওই সময়ে হঠাৎই একদিন নতুন করে আবার আশার সঞ্চার হয়।
সেদিন কয়েকজন মাঙ্গা অনুরাগী বন্ধুর সঙ্গে আগারগাঁওয়ে গল্প করছিলেন পাভেল ও আরমান। একজন বললেন, 'বন্ধু, তোমাদের গিয়ার ফোরের নকশা এত সুন্দর হয়েছে, কিন্তু আমরা তা এনজয় করতে পারলাম না। তোমরা ওই নকশা দিয়ে টি-শার্ট বানালে আমরা কিনে নিতে পারতাম।'
কথাটি মনে ধরল পাভেল ও আরমানের।
ষাট ফুটের কাছে চেনা এক দোকানে তারা টি-শার্ট কিনতে গেলেন। ৫০০ টাকা দিয়ে কালো ও সাদা রংয়ের ২০টি টি-শার্ট কিনলেন।
তারপর গেলেন তাদের কারাতে শিক্ষক বাবু ভাইয়ের কাছে। তিনি জানতেন কীভাবে টি-শার্টে প্রিন্ট করতে হয়।
কালো রঙের কাপড়গুলো মানসম্পন্ন ছিল না, প্রিন্ট করতে গিয়ে নষ্ট হলো। টিকে থাকল সর্বমোট আটটি।
দুই বন্ধু এবার একটি ফেসবুক পেইজ খোলার কথা ভাবলেন। কিন্তু নাম কী দেবেন?
আরমানের মাথায় 'কিউরিও' শব্দটি ঘুরছিল। পাভেলকে জানাতে তিনি সম্মতি দিলেন। পেইজের নাম হলো 'কিউরিও দ্য কিউরিয়াস শপ'।
এতে টি-শার্টের ঘোষণা দিতেই অ্যানিমে-প্রেমীরা আশাতীত উৎসাহ দেখালেন। প্রথম দিনেই ৩৫টি অর্ডার পেলেন আরমানেরা।
শেষ কালে নতুন আরও কিছু প্রিন্ট করাতে হয়েছিল। প্রতিটি বিক্রি করা গিয়েছিল ২৫০ টাকা করে।
মাঙ্গাপ্রেমীদের প্রথম মোলাকাত
আমাদের দেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মাঙ্গাপ্রেমীদের দেখা পাওয়া গেল কবে থেকে?
আরমান জানালেন, 'মাঙ্গালাভারদের প্রথম একটি গেট টুগেদার হয়েছিল ২০১২ সালে। তখন অ্যানিমেখোর আর মেইজ সিটি নামে দুটি ফেসবুক পেইজ মারফত মাঙ্গালাভাররা সংযুক্ত ছিলেন।
'আরিফ কাজী এবং জামিল কমিকস ও কালেক্টিবলসের জামিল ভাই ছিলেন উদ্যোক্তা। জামিল ভাই ২০১৩ সালে জেসিসি কমিকন নাম দিয়ে কমিক কনভেনশনের আয়োজন করেন। ৮–১০টি স্টল ছিল তাতে।'
কুইজ, কসপ্লের মতো ইভেন্টও আয়োজিত হয়। সাতশোর মতো দর্শক জড়ো হয়েছিলেন সেবার। সে সময় সারাদেশে হাজার ত্রিশেক অ্যানিমেপ্রেমী ছিলেন হয়তো। আরমানের মতে, তখন এ বাজার ছিল ৭–৮ কোটি টাকার।
দেশে এখন অ্যানিমেভক্ত ১৫ লাখ
কমিকন আয়োজিত হয়েছিল ২০১৪ এবং ২০১৫ সালেও। কনভেনশনগুলো অ্যানিমেভক্তের সংখ্যা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল।
আরমান বলেন, '২০১৯ সাল ছিল আমাদের সবচেয়ে ব্যস্ত সময়। আমরা যারা উদ্যোক্তা হয়ে উঠছিলাম, তাদের ব্যবসার ভিত গড়ে উঠেছিল ওই বছর। ২০১৯ সালে ৮টি ইভেন্ট আয়োজিত হয়েছিল। প্রায় সাড়ে ৬ লাখ অ্যানিমে লাভারের একটি বড় বাজার গড়ে উঠেছিল।
'আমরা ডিজাইনড টি-শার্ট এবং জাপানি সামার ড্রেস দেশেই প্রস্তুত করছিলাম এবং ভালো কাস্টমারও পাচ্ছিলাম। তারপর এলো করোনাকাল। ভুইফোঁড় অনেক উদ্যোক্তা ফেসবুকে দেখা দিলো। অনেকে প্রতারণার শিকার হয়েছেন, প্রিঅর্ডারে অর্ধেক টাকা অগ্রিম দিয়ে পণ্য হাতে পাররি। আমাদের তাই অফলাইনে ফিজিক্যাল শপে আসতে হলো।'
বাংলাদেশে এখন ১৪–১৬ লাখ অ্যানিমে লাভার আছে বলে জানান তিনি। 'প্রায় ৯ লাখ কাস্টমার আছেন, যারা ফেসবুকের মাধ্যমে অ্যানিমে অ্যাক্সেসরিজ কেনেন।'
বছরে কেবল পোশাকেরই বাজার ১০ থেকে ২০ কোটি টাকার। আরমানদের এখন কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। তারা একটি বায়িং হাউজের সঙ্গে চুক্তি করেছেন, উভয় প্রতিষ্ঠান মিলে দেশেই ডিজাইন করা টি-শার্ট তৈরি করছে।
এনামেলের তৈরি ওয়াটার বোতলের স্টিকারও তারা দেশে তৈরি করছেন। শপ সাজাতে গিয়ে তারা জাপানের বিখ্যাত অ্যানিমে স্টোর 'জাম্প শপ'-এর নকশা অনুসরণ করেছে। এজন্য অ্যানিমে চরিত্রগুলোর কাটআউট শপের চারপাশে স্থাপন করেছেন।
অনুরাগীরা যেন বসে ভাবনা বিনিময় করতে পারেন, তার জন্য একটি টেবিল ঘিরে চারটি চেয়ার রেখেছেন। দেয়ালে তাক করে অ্যাকশন ফিগার, অ্যাক্রিলিক স্ট্যান্ড, মাঙ্গা বই, পকেট ওয়াচ ইত্যাদি সাজিয়েছেন। পোশাকের জন্য আলাদা কর্নার তৈরি করা হয়েছে। ফ্রন্ট ডেস্কের মাঝখানে একটি ব্যাঙের ছবি লাগানো হয়েছে; ওটা কিউরিওর মাস্কট।
'হেলদি কমিউনিটি'র খোঁজে
আরমান শপের কিছু সংগ্রহ ঘুরিয়ে দেখালেন, চরিত্র ও অনুষঙ্গের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন। প্রথমে যে টি-শার্টটি দেখালেন তা হলো 'হাইকু' সিরিজের প্রধান চরিত্র শুও হিনাতার।
হিনাতা একজন স্কুল ছাত্র, যার স্বপ্ন একজন ভলিবল খেলোয়াড় হওয়া। কিন্তু সে লম্বা না হওয়ায় অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, তবুও ভলিবলের প্রতি ভালোবাসা তাকে বিজয়ী করে তোলে।
পরের টি-শার্টটি 'জুজুৎসু কাইজেন'-এর প্রতিনায়ক সুকুনার, যে একটি শক্তিশালী অভিশপ্ত আত্মা।
আরমান একটি জাপানি তরবারি কাটানাও দেখালেন। গড়ন ও কারুকাজের জন্য খুবই জনপ্রিয় এসব কাটানার দীর্ঘ ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও রয়েছে।
২০২২ সাল থেকে কিউরি 'অ্যানিমে কার্নিভাল'-এর আয়োজন করছে। সেখানে তাদের লক্ষ্য একটি হেলদি কমিউনিটি তৈরি করা।
আরমান বলেন, 'অ্যানিমে বা মাঙ্গা হলো একটি বিনোদন উপকরণ। এতে আসক্ত হওয়া বিপজ্জনক। তাই আমরা ইভেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকি, যেন অতিরিক্ত কিছুর প্রকাশ না ঘটে।'
ছবি সৌজন্যে: কিউরিও দ্য কিউরি