এফবিসিসিআইয়ে নির্বাচন ছাড়া পরিচালক চান না ব্যবসায়ী নেতারা
নির্বাচনী প্রক্রিয়া ছাড়া কেউ যাতে পরিচালক মনোনীত হয়ে এফবিসিসিআই (ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ) এর পরিচালনা পর্ষদে আসতে না পারে, সে বিষয়ে সংস্কারের দাবি করেছেন ব্যবসায়ী সংগঠনটির বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই-এর একদল সাধারণ সদস্য বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদের ব্যানারে এ দাবি করেন। এ সময় লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সমন্বয়ক জাকির হোসেন নয়ন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর সংগঠনটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমানকে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১২৯ দিনের মধ্যে এই প্রশাসক নির্বাচন করে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি কর হয়, গত ১৫ বছরে মোট ৫৭ জন সদস্য মনোনীত সদস্য হিসেবে পরিচালনা পর্যদে এসেছেন। যাদের মধ্য থেকে পরবর্তীতে সভাপতি, সহ-সভাপতি হয়েছেন এবং এদের অনেকেই ব্যবসায়ী না হয়েও পর্ষদে ঢুকেছিলেন। যারা মূলত এফবিসিসিআই হতে সিআইপিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা এবং প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হওয়ার প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হন। এ ধরনের মনোনীত পরিচালকরা কখনো বোর্ড মিটিং এ উপস্থিত হতেন না। এ কারণে এই প্রক্রিয়ায় পরিচালক মনোনয়ন ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে।
একই সঙ্গে সভাপতি, সহ-সভাপতি এবং পরিচালক পদে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি করা হয়, যাতে নির্বাচিতদের মধ্যে স্বৈরাচারী মনোভাব তৈরি না হয়।
তবে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনের আগে সংগঠনটির অধিভুক্ত সকল অ্যাসোসিয়েশন এবং চেম্বারের নির্বাচন দাবি করেছে এই সংস্কার পরিষদ। তাদের দাবি, এসব সংগঠনে এখন পর্যন্ত যারা আছেন, তারা সবাই বিগত সরকারের মদদপুষ্ট। কারণ চেম্বার ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোতে সীমাহীন দলীয়করণ হয়েছিল।
এসব দলীয়করণের প্রভাবে এফবিসিসিআইয়ের বাজার মনিটরিং কমিটি উল্টোভাবে কাজ করতো। বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙার বদলে সিন্ডিকেট ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে কাজ করতো এবং কর্পোরেট ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করতো ওই কমিটি।
মূলত এ কারণে কর্পোরেট কোম্পানিগুলো ধারাবাহিকভাবে পণ্যের দাম বাড়িয়ে গেলেও তা কখনো বিচারের আওতায় আসতো না বলে দাবি সংস্কার পরিষদের।
সংস্কার পরিষদ বলছে, এফবিসিআইয়ের বর্তমান ব্যবস্থাপনায় ৮০ জন পরিচালকের পদ রয়েছে। এটাকে কমিয়ে ৩৫-৪০ জনে নামিয়ে আনা হোক।
একইসঙ্গে চেম্বার থেকে পরিচালক কমিয়ে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপ থেকে পরিচালক বাড়ানোর দাবি করা হয়েছে।
এছাড়া সকল অ্যাসোসিয়েশন এবং চেম্বারে পরপর দুই মেয়াদে নির্বাচনের পর একবার বিরতি প্রদান, ৭ জন সহ-সভাপতির স্থানে ৩ জন, নির্বাচনী তফসিলের পর কোনো ভোটারের উপহার-উপঢৌকন না দেওয়ার বিধান জারি করার দাবি করে এই পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সমন্বয়ক আবুল কাশেম, গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী খোকন, মো জাকির হোসেন সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।