অধিনায়কত্ব ছাড়লেন পাকিস্তানের বাবর, নিউজিল্যান্ডের সাউদি
মঙ্গল ভেবেই যেন মঙ্গলবারকে বেছে নিলেন পাকিস্তানের বাবর আজম ও নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি। এদিন নিজেদের জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এ দুজন। দ্বিতীয় দফায় পাকিস্তানের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো বাবর ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক ছিলেন। নিউজিল্যান্ড টেস্ট দলের নেতৃত্বে ছিলেন সাউদি। শ্রীলঙ্কায় ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরে দেশে ফেরার পর এই সিদ্ধান্ত জানালেন তিনি। ভারত সফরে কিউদের নেতৃত্বে থাকবেন টম ল্যাথাম।
মঙ্গলবার পাকিস্তান স্থানীয় সময় রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন বাবর। কাজের চাপ কমাতে এবং ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেছেন, 'আমি পাকিস্তান পুরুষ ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই দলকে নেতৃত্ব দেওয়া সম্মানের ছিল। কিন্তু সময় হয়েছে সরে দাঁড়িয়ে দলে আমার খেলার ভূমিকায় নজর দেওয়ার। অধিনায়কত্ব দারুণ অভিজ্ঞতা কিন্তু এটা কাজের চাপ অনেক বাড়িয়েছে।'
দ্বিতীয় দফায় অধিনায়কত্ব পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে দায়িত্ব ছাড়লেন বাবর। প্রথম দফায় তিন ফরম্যাট থেকে পদত্যাগ করার চার মাসের মধ্যে তাকে আবারও টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে দলের অধিনায়ক করা হয়। ভারপ্রাপ্ত টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক শাহিন শাহ আফ্রিদিকে এক সিরিজ পরই বরখাস্ত করা হয়। তার স্থলাভিষিক্ত হওয়া বাবর আবারও নিজে থেকে সরে দাঁড়ালেন। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) তিনি তার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন, তবে বোর্ড থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
সরে দাঁড়ানোর ঘোষণায় বাবর আরও বলেছেন, 'পদত্যাগ করার মাধ্যমে আমি আমার আগামীর পথ আরও পরিষ্কার করবো এবং আমার খেলা ও ব্যক্তিগত উন্নয়নে আরও জোর দেবো। সবার অবিচল সমর্থন এবং আমার প্রতি বিশ্বাস রাখার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আপনাদের উৎসাহ আমার কাছে পৃথিবীর সমান। একসঙ্গে অর্জন করা সাফল্য নিয়ে আমি গর্বিত এবং একজন খেলোয়াড় হিসেবে দলের জন্য অবদান রাখতে চাই। সবার ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।'
সাউদি তার টেস্ট অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণায় বলেছেন, 'এমন একটি ফরম্যাটে ব্ল্যাক ক্যাপদের নেতৃত্বে দেওয়া আমার জন্য বিশেষ কিছু, এটা অনেক বড় সম্মানের ও গর্বের। আমি আমার ক্যারিয়ারজুড়ে সবার আগে দলকে রাখার চেষ্টা করেছি, আমি বিশ্বাস করি আমার এই সিদ্ধান্তটি দলের জন্য সেরা। আমি মনে করি, দলকে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার উপায় হলো, উইকেট নিয়ে দলকে টেস্ট ম্যাচ জেতাতে নিজের পারফরম্যান্সে মনোযোগ দেওয়া ও আমার সেরা ফর্মে ফিরে আসা।' ২০২২ সালে টেস্টের অধিনায়কত্ব পান সাউদি, তার নেতৃত্বে ১৪ টেস্টে ৬টিতে জেতে কিউইরা।
পাকিস্তানকে প্রথম দফায় নেতৃত্ব দেওয়ার মিশনে অনেক সাফল্যই কুড়ান বাবর। তার অধিনায়কত্বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভিন্ন ভিন্ন ফরম্যাটে সিরিজ জয়, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়, পরপর দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমি-ফাইনাল ও ফাইনাল খেলে পাকিস্তান। তবে দ্বিতীয় মেয়াদটি মনে রাখার মতো হয়নি বাবরের জন্য। এই সময়ে পাকিস্তান ১৩টি টি-টোয়েন্টি খেলে ৬টিতে জেতে। এর মধ্যে আছে দুঃস্বপ্নের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের বিপক্ষে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়ে পাকিস্তান। এই মেয়াদে কোনো ওয়ানডে ম্যাচে নেতৃত্ব দেননি বাবর।