ইরানে হামলার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা কি আমলে নিয়েছে ইসরায়েল?
ইরানের 'সামরিক স্থাপনায় সুনির্দিষ্ট হামলা' চালিয়েছে ইসরায়েল। প্রায় এক মাস আগে ইরান যখন ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে প্রায় ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, তখন থেকেই অবশ্য তেহরানে ইসরায়েলেলি হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। খবর বিবিসির।
অভিযান শুরু হয়েছে জানিয়ে শনিবার ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরায়েলের জবাব দেওয়ার 'অধিকার ও দায়িত্ব' আছে এবং তাদের আক্রমণ ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতাও পুরোপুরি চালু রয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তেহরানের পশ্চিম অঞ্চলে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
ইরান জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলা প্রতিহত করা হয়েছে এবং হামলায় কিছু এলাকায় 'সীমিত ক্ষতি' হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, শনিবার সকালে তেহরান, খুজেস্তান ও ইলাম প্রদেশের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তবে ইরানের 'সমন্বিত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা' হামলাটি 'সফলভাবে প্রতিহত এবং মোকাবিলা' করতে পেরেছে।
এর আগে ইরানি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, তেহরানসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।
এদিকে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যমের দাবি, তেহরানের পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে কিছু সামরিক ঘাঁটিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। অন্যদিকে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি সামরিক স্থাপনায়ও ইসরায়েলি বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে একটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে তাকে হামলার সময় সামরিক সদর দপ্তরের অপারেশন সেন্টারে দেখা যাচ্ছে।
ইরানি কর্তৃপক্ষ ধীরে ধীরে হামলায় ক্ষয়ক্ষতির সুনির্দিষ্ট ও বিশদ তথ্য প্রকাশ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েল হয়তো তার শিগগিরই আক্রমণের বিস্তারিত তথ্য জানাবে। তবে সেটি সম্ভব নির্ভর করছে তারা আরেক দফা হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে কি না, তার ওপর।
এদিকে পেন্টাগন জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে তাদের আগেই জানানো হয়েছিল। এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই।
ইসরায়েল-ইরানের এই সংঘর্ষ আরও বিস্তৃত হওয়া ঠেকানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ, এ সংঘর্ষ পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে।
ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু সামরিক স্থাপনাতেই সীমাবদ্ধ ছিল কি না, তা পর্যবেক্ষণ করছে ওয়াশিংটন। কারণ, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সংশ্লিষ্ট স্থাপনায় হামলা চালানো হলে তেহরানের পক্ষ থেকে পাল্টা আক্রমণ আসতে পারে।
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, ওয়াশিংটনের সতর্কতা আমলে নিয়ে আরও বড় পরিসরে হামলার পরিকল্পনা স্থগিত রেখেছে ইসরায়েল।