অস্ত্র মামলায় সাহেদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মোহাম্মদ সাহেদকে অস্ত্র আইনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সোমবার (২৮ আগস্ট) দুপুর ২টায় ঢাকা মহানগর ১ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
এই আইনের অপর ধারায় সাহেদকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। রায়ে আদালত বলেছেন, উভয় ধারা একসঙ্গে কার্যকর হবে।
রায় ঘোষণার আগে বেলা ১১ টার দিকে সাহেদকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে প্রথমে আদালতের গারদ খানায় রাখা হয়। পরে এজলাসে তোলা হয়। মামলায় ১৪ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ১১ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট, এর চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। এ ঘটনার পর পালিয়ে যান সাহেদ। ১৫ জুলাই সাহেদকে সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাকে হেলিকপ্টারে করে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনা হয়।
পরদিন করোনা পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্টসহ বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাহেদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর তাকে নিয়ে উত্তরায় অভিযানে যায় ডিবি পুলিশ। অভিযানে গিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করা হয়।
গত ৩০ জুলাই ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে সাহেদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরপর ২৭ অগাস্ট তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারক। ২০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন বিচারক।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর মামলাটিতে সাহেদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দাবি করেন ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। চার কার্যদিবসে মামলাটিতে ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
গত ৩০ জুলাই ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রে আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. শায়রুল ইসলাম এই চার্জশিট দাখিল করেন।
সাহেদের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) ধারায়। এই ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
আইনের ১৯ (এ) ধারায় বলা হয়েছে, বিনা লাইসেন্সে আগ্নেয়াস্ত্র রেখে কেউ যদি কোনো অপরাধ সংঘটন করে, অপরাধ যদি পিস্তল, রিভলবার, রাইফেল, শর্টগান বা অন্য আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কিত হয় তাহলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অন্য কোনো কঠোর কারাদণ্ড হবে, যার মেয়াদ ১০ বছরের কম হবে না।