সরবরাহকারীরা ডিমের কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা করছে: এফবিসিসিআই প্রশাসক
কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ডিমের সরবরাহ করলেও – এখনো সরবরাহকারী পর্যায়ে কিছু কিছু জায়গায় কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান।
আজ রোববার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর কাপ্তান বাজারে ডিম মুরগির পাইকারি বাজারে তদারকি শেষে ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে আলোচনার সময় হাফিজুর রহমান এ তথ্য জানান।
হাফিজুর রহমান বলেন, 'আমরা সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দিয়েছি, তদারকি করছি। সরবরাহ স্বাভাবিক না রাখলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।'
তিনি বলেন, ডিমের দাম নিয়ে সবাই কনসার্ন। দেশের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। দেখলাম অনেক জায়গায় অনিয়ম হচ্ছে। এসব ঠিক করতে হবে। হঠাৎ করে কেন ডিমের সাপ্লাই দিচ্ছে না, এর কারণ উদ্ঘাটন করতে হবে। এখান ব্যবসায়ীদের বলেছি, আপনারা বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য কাজ করুন।
এফবিসিসিআই -এর প্রশাসক হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে বাজার পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করে এফবিসিসিআই - এর বাজার মনিটরিং সেল। এসময়, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ডিমের মূল্য ও সরবরাহ পরিস্থিতি বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
বাজার পরিদর্শনের সময় পাইকারি ব্যবসায়ীদের প্রতিটি ডিম ১১.০১ টাকায় বিক্রি করতে গেছে। তবে খুচরা বাজারে ব্রয়লার মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ডজনে ১৫৫-১৬৫ টাকার মধ্যে। কাপ্তান বাজারে খুচরায় প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। তবে ঢাকার বিভিন্ন খুচরা বাজারগুলোতে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে।
ডিমের বাজারে অস্থিরতার মধ্যে সরকার কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা চায় বাজারে সরবরাহ ঠিক রাখতে, যখন প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৮৫ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত টাকা উঠে যায়। তখন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো কাপ্তান বাজার ও কারওয়ানবাজারে প্রতিদিন ১০ লাখ করে মোট ২০ লাখ পিস ডিম সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেয়, এবং সে অনুযায়ী ডিম দিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে ডিমের দাম কমে ১৫০ টাকায় নামলেও — গত দু-তিনদিন ধরে আবার বেড়ে কোথাও কোথাও প্রতি ডজন ব্রয়লার মুরগির ডিম ১৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিদিন ৭-৮ লাখ পিস ডিম সরবরাহ করছে, যা চাহিদার তুলনায় প্রায় অর্ধেক। কাপ্তান বাজারে প্রতিদিন ১৫ লাখ পিস ডিমের চাহিদা রয়েছে।
এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হাফিজুর রহমান বলেন, বাজার মনিটরিংয়ের উদ্দেশ্য সরবরাহ শৃঙ্খল বিঘ্নিত হচ্ছে কি না– সেটি দেখা এবং বাজার স্থিতিশীর রাখা, আর যদি সিন্ডিকেট থেকে থাকে, তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, 'বাজার ঠিক রাখতে আপনাদের (ব্যবসায়ীদের) যতটুকু করা সম্ভব, করুন। এফবিসিসিআই আপনাদের ভূমিকা দেখতে চায়। সাপ্লায়ারদের (সরবরাহকারীদের) তথ্য দিন। আমরা তাদের কাছেও যাব। তদারকি করব।'
ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা যদি সরকার নির্ধারিত দামে এবং চাহিদা অনুযায়ী ডিম পাই, তাহলে বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক খন্দকার রুহুল আমীন বলেছেন- কর্পোরেটদের বলবো সরবরাহ ঠিক রাখতে। অসাধু ব্যবসায়ীদের সাথে আমরা নাই। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হোক।