ডাউনিং স্ট্রিটের ইঙ্গিত; নেতানিয়াহু যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করলে গ্রেপ্তারের মুখোমুখি হতে হবে তাকে
যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করলে গ্রেপ্তার হতে পারেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। গাজায় কথিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু এবং ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রেক্ষিতেই এমন ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাজ্য। খবর বিবিসি'র।
প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি, তবে বলেছেন, 'সরকার আইনের অধীনে তার দায়িত্ব পালন করবে।'
যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইন ২০০১ অনুযায়ী, আইসিসি কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে তা স্থানীয় বিচারিক কর্মকর্তার কাছে পাঠাতে হয়। বিচারিক কর্মকর্তা যদি নিশ্চিত হন যে পরোয়ানাটি বৈধ, তবে তা কার্যকরের জন্য অনুমোদন দেবেন। এই আইনের অধীনে আদালতই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে গ্রেপ্তার বা হস্তান্তরের বিষয়ে।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর ডাউনিং স্ট্রিট জানিয়েছে, যুক্তরাজ্য আইসিসি'র স্বাধীনতাকে সম্মান করে এবং গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে মনোযোগী রয়েছে। তবে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানাগুলোর কার্যকারিতা নির্ভর করছে আদালতের ১২৪ সদস্য দেশের মধ্যে কতগুলো এটি বাস্তবায়ন করবে তার ওপর। উল্লেখযোগ্য যে, ইসরায়েল এবং তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্র আইসিসি'র সদস্য নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আইসিসি'র এই পদক্ষেপকে 'উগ্রপন্থী' আখ্যা দিয়ে বলেছেন, 'ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে কোনো তুলনা নেই'। অন্যদিকে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ আইসিসি'র সিদ্ধান্ত সমর্থন করেছে এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার কথা বলেছে।
বিরোধীদলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেম প্রীতি প্যাটেল এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে এটিকে 'উস্কানিমূলক' ও 'উদ্বেগজনক' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, আইসিসি ইসরায়েল এবং হামাসের কার্যকলাপকে 'নৈতিকভাবে সমান' বিবেচনা করেছে। তবে লেবার সরকার তাদের পূর্বসূরিদের পরিকল্পনা বাতিল করেছে যা আইসিসি'র গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চ্যালেঞ্জ করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল।
নেতানিয়াহু আইসিসি'র এই পদক্ষেপকে 'ইহুদিবিদ্বেষী' বলে অভিহিত করেছেন। হামাস আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে এবং একে ন্যায়বিচারের অংশ হিসেবে দেখেছে। তবে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আওতায় থাকা হামাসের সামরিক নেতা মোহাম্মদ দেইফের প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেনি।
ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাঁ-নোয়েল বারো আইসিসি'র সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বলেন, এটি একটি অভিযোগের আনুষ্ঠানিকতা মাত্র, কোনো রায় নয়। তিনি আরও বলেন, গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছানো না যাওয়াকে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানিয়েছে ফ্রান্স। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, হামাস এবং ইসরায়েল সরকারের মধ্যে কোনো তুলনা করা উচিত নয়।