তামিম ঝড়ের দিনে চট্টগ্রামের জয়, অল্প পুঁজি নিয়েও জিতল খুলনা
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চলছে জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি-টোয়েন্টি। উদ্বোধনী দিনে সত্যিকারের টি-টোয়েন্টি প্রদর্শনী দেখা যায়। চার ম্যাচের তিনটিই হয় হাই স্কোরিং। এক ম্যাচে ২০০ ছাড়ানো লক্ষ্যও তাড়া করে জেতার ঘটনা দেখা যায়। কিন্তু দ্বিতীয় দিনেই অন্য চিত্র। দিনের প্রথম দুই ম্যাচে সেভাবে রান হয়নি। ওভার কমানো ম্যাচটিতে মোটামুটি রান হলেও আরেকটি ম্যাচ হয়েছে লো স্কোরিং।
এরপরও অবশ্য রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে। অল্প সংগ্রহ নিয়েও জিতেছে নুরুল হাসান সোহানের দল খুলনা বিভাগ। আরেক ম্যাচে দেখা গেছে তামিম ইকবালের ব্যাটিং ঝড়। পরে প্রতিপক্ষ ওপেনার তৌফিক খান তুষার তাণ্ডব চালালেও জিতেছে তামিমদের দল চট্টগ্রাম বিভাগই। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে সিলেট বিভাগকে ১২ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম। মূল মাঠে রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে বরিশাল বিভাগকে ১ রানে হারিয়েছে খুলনা বিভাগ।
১৫ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাটিং করে ৯ উইকেটে ১৪৫ রান তোলা চট্টগ্রাম তামিমের ব্যাটে এগোয়। দলের প্রায় অর্ধেক রান আসে তার ব্যাট থেকে। সাত মাস পর মাঠে ফিরে প্রথম ম্যাচে অনুজ্জ্বল ছিলেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি এই ওপেনার। তবে ছন্দ খুঁজে নিতে দেরি করলেন না তিনি। আজ খুনে ব্যাটিংয়ে ৩৩ বলে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৫ রান করেন ম্যাচসেরা তামিম।
১৭ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৯ রান করেন মাহমুদুল হাসান জয়। ১২ বলে ১৫ রান করেন সাব্বির হোসেন শিকদার। দলটির বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউ-ই দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। সিলেটের পেসার খালেদ আহমেদ ৪টি উইকেট নেন। তোফায়েল আহমেদ ২টি এবং আবু জায়েদ রাহি ও ইবাদত হোসেন একটি করে উইকেট পান।
লক্ষ্য তাড়ায় দুঃস্বপ্নের শুরু হয় সিলেটের। দলীয় ১৪ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট হারায়। এরপরও অবশ্য দলকে চাপ বুঝতে দেননি ব্যাট হাতে ঝড় তোলা তৌফিক তুষার। ওয়াসিফ আকবারকে এক পাশে রেখে দাপুটে ব্যাটিং করে যেতে থাকেন তিনি। এই জুটি থেকে আসে ৭৯ রান, ৮.২ ওভারে ৯৩ রানে পৌঁছে যায় সিলেট। কিন্তু এই জুটি ভাঙার পরই যেন খেই হারায় দলটি। ১৩ রান করা ওয়াসিফের বিদায়ের পর দ্রুতই থামেন অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বিও।
শুরুতে বিপর্যয় সামলানো তৌফিক তুষার পরের পতনেই দিক হারাননি। ১১তম ওভার পর্যন্ত উইকেটে থাকেন তিনি। ডানহাতি এই ওপেনার ৩৬ বলে ৭টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৭৬ রানের দুর্বার এক ইনিংস খেলেন। তার বিদায়ের পর সেভাবে আর লড়াই-ই করতে পারেনি সিলেট, চার বল বাকি থাকতে ১৩৩ রানে অলআউট হয় তারা। চট্টগ্রামের দুই স্পিনার হাসান মুরাদ ও নাঈম হাসান ৩টি করে উইকেট নেন। আহমেদ শরিফ পান ২টি উইকেট। একটি করে উইকেট নেন ফাহাদ হোসেন ও ইরফান হোসেন।
মূল মাঠে টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা খুলনা ৯ উইকেটে ১৩০ রান তোলে। এনামুল হক বিজয় ১৮ বলে ৫টি চারে ২৪, মোহাম্ম মিথুন ১৯ বলে ১৪, অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ৩৫ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৯ রান করেন। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ১৩ ও জিয়াউর রহমান ১৭ রান করেন। বরিশালের পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বি ৪টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান তানভীর ইসলাম, মইনুল ইসলাম ও আহরার আমিন পিয়ান।
লক্ষ্য তাড়ায় আব্দুল মজিদ ও মঈন খান ছাড়া বরিশালের আর কোনো ব্যাটসম্যান রানের দেখা পাননি। এ দুজনের বাইরে দুই অঙ্কের রানই করেন একজন, সেটাও কেবল ১০ রানের ইনিংস। মজিদ ৫৩ বলে ৫টি চারে ৫১ রান করেন। মঈন লড়েছেন শেষ পর্যন্ত। কিন্তু ২৭ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৩ রানের দারুণ ইনিংস খেলেও দলকে জেতাতে পারেননি তিনি। ৬ বলে ১০ রান করেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। বরিশালের ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ১২৯ রানে। খুলনার নাহিদুল ইসলাম ও ম্যাচসেরা মেহেদী হাসান রানা ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান আল-আমিন হোসেন ও মৃতুঞ্জয়।