পরিত্যক্ত স্টোরেজ ইউনিটে মিলল মাইকেল জ্যাকসনের অপ্রকাশিত গানের ক্যাসেট
সম্প্রতি 'কিং অব পপ'খ্যাত মাইকেল জ্যাকসনের অনেকগুলো অপ্রকাশিত ক্যাসেট খুঁজে পেয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়া হাইওয়ে পেট্রোলের সাবেক কর্মকর্তা গ্রেগ মাসগ্রোভ (৫৬)।
সান ফার্নান্দো ভ্যালির একটি স্টোরেজ ইউনিট থেকে তিনি মাইকেল জ্যাকসনের অপ্রকাশিত ক্যাসেটগুলো উদ্ধার করেন।
ভ্যান নুয়েসে নামের এক সহকর্মীর কাছে জানার পর মাসগ্রোভ টেপগুলো নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন। তার সহকর্মী তাকে একটি স্টোরেজ ইউনিটের ব্যাপারে জানায়, সম্প্রতি যেটি তিনি ভ্যান নাইস থেকে কিনেছেন। এই ইউনিটটি একসময় ব্রায়ান লরেন নামের এক মিউজিক প্রযোজক ও গায়কের ছিল [মাসগ্রোভের তথ্যমতে, বর্তমানে তার অবস্থান জানা যায়নি]।
ক্যাসেটগুলোতে জ্যাকসনের ১২ টি অপ্রকাশিত গান রয়েছে, 'ডেঞ্জারাস' অ্যালবাম প্রকাশেরও আগে ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ সালের মধ্যে তিনি এগুলো রেকর্ড করেছিলেন।
মাসগ্রোভ এ ব্যাপারে হলিউড রিপোর্টারকে বলেছেন, 'আমি সব ফ্যান সাইটে খুঁজে দেখেছি। এর মধ্যে কিছু গান রয়েছে যেগুলো প্রকাশ হয়েছে বলে গুজব রয়েছে, কিছু গানের সামান্য অংশ প্রকাশ হয়েছে। আবার এমন কিছু গান রয়েছে যা একেবারেই প্রকাশ হয়নি।'
টেপগুলোতে জ্যাকসন এবং সম্ভবত ব্রায়ান লরেনকে রেকর্ডিং ও সৃজনশীল প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে শোনা যায়।
মাসগ্রোভ বলেন, 'আমি এই গানগুলো শুনছি, আর আমার গায়ে কাঁটা দিচ্ছে; কারণ এই গানগুলো পৃথিবীতে আমার আগে কেউ শোনেনি।'
তিনি বলেন, 'মাইকেল জ্যাকসন সত্যি সত্যি কথা বলছেন এবং অন্যের সঙ্গে মজা করছেন, এগুলো শুনে সত্যিই দারুণ লাগছে।'
অপ্রকাশিত এই গানগুলোর মধ্যে একটি গানের শিরোনাম 'ডোন্ট বিলিভ ইট'। এই গানে সম্ভবত মিডিয়ায় এই পপ তারকা সম্পর্কে যে গুজব ছড়াতো, তার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। গানটির ভাইব ও স্টাইল জ্যাকসন সেই সময় যে ধরনের সংগীত প্রকাশ করতেন তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
'সেভেন ডিজিটস' শিরোনামের আরেকটি গানে জ্যাকসনকে গানের নামের অর্থ ব্যাখ্যা করতে শোনা যায়। এই সেভেন ডিজিটস ছিল মর্গে [লাশ রাখার স্থান] মৃতদেহের জন্য ব্যবহৃত আইডেন্টিফিকেশন নম্বর।
সম্ভবত ক্যাসেটগুলোয় থাকা সবচেয়ে চমকপ্রদ গানগুলোর একটি হলো 'ট্রুথ অন ইউথ', যা মাইকেল জ্যাকসন ও এলএল কুল জে-এর মধ্যে একটি র্যাপ ডুয়েট বলে মনে হয়।
এই র্যাপার অতীতে জ্যাকসনের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে কথা বলেছিলেন।
তিনি নিশ্চিত করেছিলেন যে তারা একসঙ্গে গান রেকর্ড করেছেন। এই গানটি বেশ কিছু কারণে স্বতন্ত্র, তবে এর সবচেয়ে বড় স্বাতন্ত্র হলো এতে মাইকেল জ্যাকসন র্যাপ করেছেন।
তবে মাইকেল জ্যাকসনের ভক্তদের জন্য দুঃসংবাদ যে সম্ভবত মাসগ্রোভই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি এই গানগুলো শোনার সুযোগ পাবেন।
কারণ মাসগ্রোভই এবং তার আইনজীবী এই ক্যাসেটগুলোর সম্পর্কে জানাতে জ্যাকসন এস্টেটের কাছে গিয়েছিলেন।
মাসগ্রোভ জানান, এস্টেট ক্যাসেটগুলোর ব্যাপারে নিজেদের মতো করে অনুসন্ধান করেছে। তবে অজানা কারণে তারা ক্যাসেটগুলো কেনার প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।
তিনি আরও জানান, তবে তারা তাকে একটি অফিসিয়াল চিঠি দিয়েছে, যাতে বলা হয়েছে যে এস্টেট এই ক্যাসেটগুলোর মালিকানা দাবি করবে না। তবে চিঠিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, মাসগ্রোভ এবং ভবিষ্যতে যারা এই ক্যাসেটগুলো কিনবেন, তারা রেকর্ডিং বা সঙ্গীতের রচনার কপিরাইটের মালিক হবেন না, কপিরাইট এস্টেটেরই থাকবে। অর্থাৎ, এই ক্যাসেটগুলো কখনোই জনসমক্ষে প্রকাশ করা যাবে না।
যদিও এই আবিষ্কারের সঠিক মূল্য এখনও স্পষ্ট নয় —তবে মাসগ্রোভ এবং তার সহকারীরা মনে করেন, এর মূল্য সাত অঙ্কের হতে পারে।
মাসগ্রোভ শিগগিরই এর মধ্যকার চারটি ক্যাসেট নিলামে তোলার পরিকল্পনা করেছেন।
হতে পারে মাইকেল জ্যাকসনের অনেক ভক্ত, যেমন লেডি গাগা জ্যাকসনের ৫৫টি স্মৃতিচিহ্ন নিলামে চড়াদামে কিনেছিলেন, এই ক্যাসেটগুলো তাদের ব্যক্তিগত সংগ্রহের জন্য কিনতে পারেন।